প্রধান বিচারপতির অনুমতি ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে এবং দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (১৯ মার্চ) বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যপ্যানেলের ১৪ জন প্রার্থীর পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করা হয়।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, বিচারপতি মো: খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে তিনিসহ সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী এ রিট আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন। আদালত আগামীকাল সোমবার এ আবেদনের ওপর শুনানির জন্য তালিকায় আসবে।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের আইজি, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, ডিবি প্রধান ও শাহবাগ থানার ওসিকে বিবাদি করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে পুলিশের বেআইনি কর্মকাণ্ডের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করেছি। রিটে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাসহ রুল জারির আর্জি জানিয়েছি।
সাংবাদিক-আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় লইয়ার্স কাউন্সিলের নিন্দা
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিল (এনএলসির) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু।
রোববার এনএলসির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘটনা রাষ্ট্র কর্তৃক পুলিশকে ‘অপব্যবহারের নির্মম দৃষ্টান্ত’। এ সময় তিনি হামলার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এরই সাথে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও আইনজীবী নেতা ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দীন খোকনসহ অসংখ্য আইনজীবীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও অনতিবিলম্বে মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং উক্ত মামলায় গ্রেফতার আইনজীবীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করে সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রথম দিনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের ভোটকেন্দ্রের মধ্যে হট্টগোলের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধরের শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। ওইদিন পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধরের স্বীকার হন অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক ও আইনজীবী।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হট্টগোল ও ধস্তাধস্তির মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের দুই দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে এ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে। নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা।