অন্য ভাষায় :
রবিবার, ১০:৪৭ অপরাহ্ন, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

সীমা গ্রুপের চেয়ারম্যানকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নেয়ায় সমালোচনার ঝড়

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৫৬ বার পঠিত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শিল্প প্রতিষ্ঠান সীমা গ্রুপের চেয়ারম্যান পারভেজ উদ্দিন সান্টুকে গ্রেফতারের পরে হ্যান্ডকাফ ও কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নিয়ে যাওয়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে।

বুধবার দুপুরে পুলিশ তাকে আদলতে হাজির করে। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে নগরীর একটি বাড়ি থেকে সীমা অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণ মামলায় তাকে গ্রেফতার করে শিল্প পুলিশ।

সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রামের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের নিজস্ব টাইম লাইনে এ ছবিটি পোস্ট করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছে।

কৃষ্ণ চন্দ্র দাশ নামে একজন লিখেছেন, ‘কোমরে এ দড়ি মানে দেশের হাজারো শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোমরে দড়ি। তিনি একজন উদ্যোক্তা। এ হিসেবে হাজারো উদ্যোক্তার কোমড়ে দড়ি। যেহেতু তিনি মামলায় আজহার নামীয় আসামি, তাকে দাগি আসামির মতো দড়ি বেঁধে না নিয়ে ভিন্নভাবে নেয়া যেত।’

সরওয়ার্দী নামক একজন লিখেছেন, ‘করোনা সময় যখন মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মরে যাচ্ছে, তখন এই মানুষটা বিনামূল্যে অক্সিজেন দিয়ে মানুষের পাশে ছিলেন। আমি বলছি না তার দোষ নেই, তাদের ভুলের কারণে হয়ত এমন দুর্ঘটনা হয়েছে, বিপরীতে ক্ষমা চেয়েছেন তারা। আইন অনুযায়ী দুই লাখ টাকার পাশাপাশি আরো আট লাখসহ মোট ১০ লাখ টাকা করে নিহত পরিবারের হাতে তুলে দেন ও আহতদের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন। ঘটনার পাঁচ দিনের মধ্যে সব কিছু দিয়ে দেয়ার পরেও তাকে জেলে যেতে হবে কেন? আগে একটি কন্টিইনার ডিপোতে ৫১ জন নিহত হওয়ার পরেও তাদের কেন জেলে নেয়া হল না?’

নুরুল হুদা নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘সান্টু সাহেব সীতাকুণ্ড থেকে এমপি হতে চেয়েছিলেন। তাই এ প্রতিহিংসা।’

সাহাব আজিজ নামে একজন লিখেছেন, ‘করোনার সময় আমার মা ছিল ডায়ালাইসিস রোগী। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালি সিলিন্ডার নিয়ে দৌড়াদৌড়ি ও চারিদিকে ফোন করেও অক্সিজেন রিফিল করতে পারছিলাম না। হঠাৎ উনার ফেসবুক পোষ্টটা চোখে পড়লো, ফোন করতেই সাথে সাথে সাড়া পেলাম। ফ্যাক্টরিতে গিয়ে রিফিল করে নিয়ে আসলাম, কোনো টাকা নেয়নি। সত্যিই পারভেজ ভাই খুব ভালো মানুষ। আপনারা উনার সম্মানহানি করবেন না। উনাকে নিঃশর্তে মুক্তি দিন।’

ওমকর নন্দি নামে এক ব্যক্তি লিখেন, ‘দুনিয়াতে ভালো মানুষের দাম নেই, ক্ষতিপূরণও দিলেন, ক্ষমাও চাইলেন। তারপরও পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। দুঃখজনক।’

ফজলে করিম চৌধুরী নিউটন নামে একজন লিখেছেন, ‘প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা হতেই পারে। একজন শিল্পপতিকে এভাবে কোমড়ে দড়ি বেঁধে আদালতে তোলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ বাড়াবাড়িতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।’

সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম সেকান্দর হোসাইন তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে ছবিটি পোস্ট করে লিখেন, ‘অপরাধ কী? তার কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। বিস্ফোরণ-দুর্ঘটনা কি আর কোথাও হয় না? প্রতিদিন মহাসড়কে দুর্ঘটনা হয় না? উনি তো চুরি করেননি। কোনো খুনও করেননি। দুর্ঘটনার নিউজ করেছি। তারা সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। এরপরেও তিনি গ্রেফতার হলেন। এখন দেখছি কোমরে দড়ি দিয়ে টেনে নেয়া হচ্ছে! দৃশ্যটা মোটেও ভালো লাগেনি। সকল শিল্পপতিকে বলব, হয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করুন, না হয় এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।’

এস এম সফিউল আজম লিখেছেন, ‘নিন্দা জানানোর ভাষাই নেই। আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ এভাবে না দিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করলে ভালো হতো। এভাবে কোমরে দড়ি পড়তে হত না। যেভাবে কোমরে দড়ি পড়তে হয়নি অন্য একটি ডিপোর মালিককে।’

প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণে সাতজন নিহত ও ২৭ জন শ্রমিক আহত হন। ৯ মার্চ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামালের উপস্থিতিতে সীমা গ্রুপের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারগুলোকে ১০ লাখ টাকা, অঙ্গহানিদেরকে পাঁচ লাখ টাকার চেক প্রদান ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়া নিহত ও অঙ্গহানী পরিবারের একজন সদস্যকে সীমা গ্রুপে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com