ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে রাজনীতিতে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের দেখা গেল ভিন্ন চেহারায়। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এক টেবিলে বসলেন তারা। এছাড়াও বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর সাথে করমর্দন ও কুশল বিনিময় করতে দেখা যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ডিএমপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এক টেবিলে দেখা যায় তাদের।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু ও আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল। বরকতউল্লা বুলু ঢাকা-১৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লাহ, ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব রহমান, রংপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার সাথে এক টেবিলে বসেন। পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানস্থলে এসে বিএনপি নেতাদের সাথে হাসিমুখে কুশল বিনিময় ও করমর্দন করেন। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের কোনো অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের এই উপস্থিতি অনেকেরই নজর কেড়েছে।
এ ব্যাপারে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ডিএমপির আমন্ত্রণ পেয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। পুলিশ জনতার প্রতিপক্ষ নয় বন্ধু, তারা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবে এই বার্তা দিতেই আমরা সেখানে যাই। এরমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে কুশল বিনিময় করেন।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলেন, ‘ডিএমপি দাওয়াত করেছে তাই আমি ও বুলু ভাই সেখানে গিয়েছি। পুলিশ সরকারের নয়, রাষ্ট্রের। সাংবিধানিক আইনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের সবকিছু করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৭৬ সালের এই দিনে ডিএমপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে পুলিশের আধুনিকায়ন, তাদের নতুন অস্ত্রে সজ্জিতকরণসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পুলিশকে কনকর্ড প্লাজা দেয়া হয়েছিল।
ডিএমপি সূত্র জানায়, বিএনপির ১০ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। প্রতি বছরই তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো: আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, এমপিসহ রাজনৈতিক নেতা, বিচারক, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে ডিএমপি সদর দফতর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা রাজারবাগে এসে শেষ হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিকেলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর ডিএমপির সার্বিক কার্যক্রমের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা অংশ নেন। অভিনেতা, অভিনেত্রী, সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী ও ডিএমপির শিল্পীরা এতে অংশ নেন।