স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো ও জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তা। আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন নাকানো এরিকো।
আদালতের রায় অনুযায়ী দুই সন্তানকে জাপান নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। সাক্ষাতে এরিকোকে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সহায়তার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে গতকাল রোববার আদালত আদেশ দেন যে, জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা তার মায়ের জিম্মায় থাকবে। একই সঙ্গে মেয়েদের নিয়ে জাপানেও যেতে পারবেন তাদের মা।
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। বিচারক দুরদানা রহমান এ রায় ঘোষণা করে মামলাটি খারিজ করে দেন।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানে এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। ১২ বছরের সংসারে তাদের ঘরে আসে তিন কন্যাসন্তান। তবে স্ত্রীকে ডিভোর্সের চিঠি দেওয়ার পর সন্তানদের কাস্টডি নিয়ে জাপানের পারিবারিক আদালতে শুরু হয় মামলা। এর মধ্যে ২০২১ সালে গোপনে দুই মেয়ে জেসমিন মালিকা (১২) ও নাকানো লায়লাকে (১১) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে গত বছরের ৭ জুলাই ঢাকায় আসেন এরিকো। পরে সন্তানদের ঠিকানা খুঁজে বের করেন।
এরপর মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে এসে এ জাপানি নারী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বিচারক তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন। তবে তারা না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো।
পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা সেটা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।