বিএনপির বিরুদ্ধে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে মুখ খুললেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি জানিয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের চিঠি দিয়েছে বিএনপি। কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি।’ রাজধানীর গুলশানে মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার হরণের জন্য সরকারি বাহিনী ব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, রাজনৈতিক গায়েবি মামলার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত এই সরকারের অপকর্মের ফিরিস্তি আজ সর্বজনবিদিত। তাদের অপকর্মের জন্য যদি কারও ভিসা বাতিল হয় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়, তাহলে তা গোটা জাতির জন্য কলংকজনক অধ্যায়। এরপরও এই কানকাটা নির্লজ্জ সরকার এটাকে জাতীয় সংকট হিসাবে গণ্য না করে বেহায়ার মতো তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য অপতৎপরতায় লিপ্ত।’
কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার সর্ব প্রথম সেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতো উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘অথচ সরকার হাঁটছে উল্টো পথে। গুমের শিকার পরিবারের বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছে, খুনিদের রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যা থেকে প্রমাণিত হয় সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা এই সব খুন গুমের সঙ্গে জড়িত। তাই অবিলম্বে সরকার পদত্যাগ করে খুন, গুমের সঙ্গে জড়িত নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সবার নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার জনগণের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে, যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকৃত। তার ভাষ্য মতে, সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। খুন, গুমের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির দায় কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কিভাবে জনগণের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে? জনগণের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লংঘনের মতো গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘একজন প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেন, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়। ওই পদক্ষেপকে নৈতিক সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোনো দায় দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাধুবাদ জানায়।’ তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।