রবিবার, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
সংসদে নারীর জন্য ১০০ আসন চান বদিউল আলম মজুমদার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রতিবেশীদের আশানুরূপ সমর্থন পায়নি বাংলাদেশ ২৮ বছরে প্রথমবার কলকাতার বইমেলায় নেই বাংলাদেশ বাচ্চারা জীবন দেয় আর মুরব্বিরা পদ ভাগাভাগি করেন : হাসনাত পল্লবীতে দুই শিশুপুত্রকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যার চেষ্টা ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি নেই’ যে কারণে অপহরণ করা হয় আজিমপুরের সেই শিশুকে উত্তরবঙ্গের ৩ বিভাগে কি একজনও যোগ্য লোক নেই : সারজিস তিন শূন্যের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পৃথিবী গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার কেউ যেন অর্থপাচার না করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে যাবো : অর্থ উপদেষ্টা

বান্দরবান সীমান্তে রোহিঙ্গা শিবিরে কী হচ্ছে?

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৬৩ বার পঠিত

বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম তমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে বুধবার একজন নিহত হবার পর আজ বৃহস্পতিবার সকালেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার তমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগার পর কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে জানা যাচ্ছে।

যদিও ঠিক কতজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকেছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসন দাবি করছে সংখ্যাটি বেশি নয়।

যদিও শূন্যরেখায় অবস্থানকারী কয়েকজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েছে যাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা এখন চলছে। তমব্রু সীমান্তের এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পটি আসলে বৈধ বা অনুমোদিত কোনো রোহিঙ্গা শিবির নয়।

মিয়ানমার থেকে পালিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি এমন ছয় শ’র বেশি রোহিঙ্গা পরিবার সেখানে আন্তর্জাতিক শূন্যরেখায় অনেক দিন ধরেই অবস্থান করছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ভোরে প্রায় এক ঘণ্টা গোলাগুলির আওয়াজ শুনেছেন তারা। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে বুধবারের ঘটনার পর সেখানে নতুন করে আর কিছু ঘটেনি।

উপজেলা প্রশাসন যা বলছে
নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই বুধবার সংঘর্ষ ও বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।

‘যতটুকু তথ্য পেয়েছি তাতে রোহিঙ্গাদের দু গ্রুপ—আরসা এবং আরএসওর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বুধবার। এটি তারা করেছে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার অংশ হিসেবে। ওই সংঘর্ষেই একজন নিহত হয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে খবর পাচ্ছি। ঘটনাটি আন্তর্জাতিক শূন্যরেখায় হওয়ায় আমাদের সরাসরি কিছু করার নেই। তবে কয়েকজন বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলো যাদের কয়েকজনকে ধরা হয়েছে ও বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও বলেছিলেন যে কয়েকজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করেছে এবং তাদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

মিয়ানমারের দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে সক্রিয় তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তমব্রু সীমান্ত ছাড়াও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও এসব সংগঠনের তৎপরতার তথ্য বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে এসেছে।

এই সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গারা বসবাস করছে মূলত ২০১৭ সাল থেকেই। তবে গত বছর থেকেই এটি বার বার আলোচনায় আসছে নানা ঘটনার কারণে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই সীমান্তের মিয়ানমার অংশে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে বেশ কিছুদিনের সংঘর্ষের সময় বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মর্টার শেল পড়েছিলো।

পরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে জানিয়েছিলো যে ঘটনাটি ভুলে হয়েছে অর্থাৎ ভুলক্রমে মর্টার শেলটি বাংলাদেশ অংশে পড়েছে।

বুধবার যা ঘটেছিলো
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে গোলাগুলি শুরু হয় এবং এটি চলে দুপুর প্রায় ১২টা পর্যন্ত।

এসময় সেখানকার অন্তত পাঁচশ ঘরে আগুন দেয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে। ফলে এসব ঘরবাড়িতে থাকা রোহিঙ্গারা সেখানকার একটি স্কুলসহ আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।

এরপরই আরসা ও আরএসওর মধ্যে এ সংঘর্ষ চলছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে খবর পাওয়া যায়, যা পড়ে প্রশাসনও নিশ্চিত করে।

পরে রাতে আর কোনো ঘটনা না ঘটলেও আজ বৃহস্পতিবার ভোরে আবারো ক্যাম্পের ভেতরে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়।

তমব্রুর উত্তেজনা নতুন নয়
মিয়ানমারে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত সংঘর্ষের কারণে গত বছরের আগস্ট সেপ্টেম্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ঘুমধুম ও তমব্রু এলাকায়।

আগস্ট মাসে বাংলাদেশের এলাকায় গোলা পড়ার কারণে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সতর্ক করেছিলো বাংলাদেশ।

আর সব ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি এবং অন্যান্য বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছিলো বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।

তবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঠিক কোন পরিস্থিতির কারণে তমব্রু সীমান্তে এসব ঘটছে- সেটি জানা কঠিন। কারণ, সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে কড়া সেন্সরশিপ থাকায় সেদেশের কোনো তথ্য সাধারণত পাওয়া যায় না।

আবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে থাকা কিছু রোহিঙ্গা গোষ্ঠীও আবার নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে কিংবা প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজনকে হত্যা করছে এমন উদাহরণও আছে।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com