জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে এ ইউ মাসুদ (আরফান উদ্দিন) নামের এক নেতা পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাত ৯টা ৮ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ সিদ্ধান্ত জানান তিনি। এ ইউ মাসুদ উপজেলা কমিটিতে ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী পদে ছিলেন।
ফেসবুক পোস্টে পদত্যাগপত্র আকারে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর বরাবর একটি লেখা লেখেন এ ইউ মাসুদ ।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এনসিপির সূচনালগ্ন থেকে সাতকানিয়া উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছি। গত ২৫ জুন কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে সাতকানিয়া উপজেলা সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আমাকে ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তে কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়া এ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থি। তা ছাড়া আমি এ পদে থাকব- এ ব্যাপারে আমাকে আগে অবগত করা হয়নি। এ কারণে আমি পদত্যাগ করছি। পাশাপাশি এরপর থেকে এনসিপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখব না।’
এ ইউ মাসুদ সাতকানিয়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমে বলেন, কমিটিতে পদ দেওয়ার আগে আমার সঙ্গে কথা বলা হয়নি। এক ব্যক্তি বলতে আমি এনসিপির দক্ষিণ জেলার সমন্বয়ক সিফাত হোসাইনকে বুঝিয়েছি। মূলত তার একক সিদ্ধান্তেই এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কমিটি দেওয়ার আগে জানানো হয়েছিল, আমি প্রধান সমন্বয়কারীর পদ পাব। কিন্তু কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর দেখলাম, যুগ্ম সমন্বয়কারীর পদ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখানে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন কিংবা সম্পর্ক অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। অর্থাৎ ওনারা (এনসিপি) পুরোনো ধাঁচেই রাজনীতি করে যাচ্ছেন। পদ-পদবি দেওয়ার ক্ষেত্রে বা কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের চর্চাগুলো হয়, সেগুলোই দেখা গেছে।
এ ইউ মাসুদের অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে দলটির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সংগঠক সিফাত হোসাইন বলেন, কমিটি গঠনের পর এ ইউ মাসুদের বিষয়ে অভিযোগ আসতে থাকে। তিনি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন। এ অভিযোগের বিষয়ে তিনি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারেননি। এ কারণে কমিটির বাকি সদস্যরা তাকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন না। এসব কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়া কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন বা সম্পর্ক; কোনোটাই ঘটেনি।
উল্লেখ্য, গত ১ আগস্ট রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে নিজের ফেসবুকে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম। ১৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড তিনি লাইভে ছিলেন।
এ সময় ফাতেমা বলেন, ‘চট্টগ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থের কাছে, তাদের চাওয়া-পাওয়ার কাছে আমাদের রাজনীতি হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছেন আন্দোলনের সম্মুখসারিতে থাকা অনেকে। এখন বলতে গেলে কেউই নেই। এ সবকিছুর জন্য কিছুসংখ্যক ভাই-ব্রাদার দায়ী। তারা কেন্দ্রের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চট্টগ্রামে একটার পর এক কোরাম বানিয়েছেন। এর দায় আপনাদের নিতে হবে।’