মঙ্গলবার, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ক্যানসার চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রেডিওথেরাপি

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৩৪ বার পঠিত

ক্যানসার চিকিৎসার বেশ কিছু ধাপ রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হলো রেডিওথেরাপি বা রেডিয়েশন থেরাপি। রোগের ধরনের ওপর রেডিওথেরাপি নির্ভর করে। রেডিয়েশন থেরাপির সাহায্যে ক্যানসারের কোষ মেরে ফেলা হয়। দেখা যায়, ৬০-৭০ শতাংশ ক্যানসার রোগীর ক্ষেত্রে কোনো না কোনো সময় রেডিওথেরাপির প্রয়োজন হয়। রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে উচ্চ শক্তির বিকিরণ ব্যবহার করে ক্যানসার কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করা হয় এবং বিভাজন ও বৃদ্ধির ক্ষমতা নষ্ট করা হয়।

অনেক চিকিৎসকের মতে, রেডিয়েশন থেরাপি ক্যানসারের আদর্শ চিকিৎসা পদ্ধতি, যা প্রায়ই কেমোথেরাপি মতো অন্যান্য থেরাপির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। লিনিয়ার এক্সিলারেটর নামক মেশিন ব্যবহার করে এ থেরাপি দেওয়া হয়। উচ্চ শক্তি নির্গমনের কারণে এক্স-রে ক্যানসার কোষ মেরে ফেলতে পারে, টিউমার সংকুচিত করে। চিকিৎসার এ পদ্ধতির নামই রেডিয়েশন থেরাপি। তবে রেডিয়োশন থেরাপি নিয়ে রোগীদের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা ও ভীতি কাজ করে।

যে পর্যায়ে রেডিওথেরাপি : এ থেরাপিতে রোগীর দেহে কোনো ব্যথা হয় না। বলা যায়, অনেকটা এক্স-রের মতো এবং রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে সময়কাল নির্ধারণ করা হয়। এ থেরাপির মূল লক্ষ্য, রোগীর দেহের ক্যানসারযুক্ত কোষ বিনাশ করা। অনেক ক্ষেত্রে রেডিয়েশন থেরাপির ফলে স্বাস্থ্যকর কোষের ক্ষতি হয় ঠিকই, তবে সেটি স্থায়ী হয় না। শুধু প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলো লক্ষ্য করে এ থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। পাশাপাশি ক্যানসার নয়, এমন কোষ রেডিয়েশন থেরাপি থেকে নিজেকে পুনরুদ্ধার করতে পারে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। তবে অত্যন্ত কম। সংশ্লিষ্ট রোগী সহজেই নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারেন। ওজন কমে যাওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ক্ষুধা কমে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করেও একটি ডায়েট চার্ট তৈরি করে তা মনে চলতে বলা হয়ে থাকে।

চিকিৎসা পদ্ধতি : ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে রেডিওথেরাপি ব্যবহার করা যায়। যেমন- শেষ পর্যায়ের ক্যানসারের লক্ষণ কমাতে, ক্যানসারের চিকিৎসা হিসেবে, অস্ত্রোপচারের আগে কোনো টিউমারের আকার ছোট করতে, অস্ত্রোপচারের পরে অবশিষ্ট ক্যানসার কোষ নির্মূল করতে ইত্যাদি। একেক ধরনের ক্যানসার চিকিৎসায় শরীরের একেক জায়গায় রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়। যেমন- মুখ ও গলার ক্যানসারের প্রধান চিকিৎসা হলো রেডিওথেরাপি। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রেও রেডিয়েশনের দরকার হয়। একইভাবে প্রায় প্রতিটি জায়গায়, প্রতিটি অঙ্গের ক্ষেত্রে রেডিয়েশনের ভূমিকা রয়েছে। কোনো কোনো ক্যানসার চিকিৎসার প্রাথমিক অবস্থায় এটা দেওয়া হয়। কোথাও অন্য চিকিৎসার পাশাপাশি চলে। প্রথমদিকে ডিপ এক্স-রে থেরাপি দিয়ে করা হতো। এখন আধুনিক লিনিয়ার এক্সেলেটরভিত্তিক চিকিৎসা সম্পূর্ণ আলাদা। নতুন পদ্ধতি টিউমার চিকিৎসার পাশাপাশি স্বাভাবিক কোষেরও সুরক্ষা দেয়। অর্থাৎ বর্তমান রেডিয়েশন থেরাপিতে স্বাভাবিক কোষ অল্পই থাকে।

সঠিক ডোজ প্রয়োগ করতে না পারলে আক্রান্ত মানুষটি সুস্থ হবে না। রেডিয়েশন থেরাপিতে কোনো লাভ হবে না। মানুষের মধ্যে এ ব্যাপারে ধারণাটি এমন, কোনো একটি আলো দিয়ে জায়গাটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আগের রেডিয়েশন থেরাপিতে ত্বক রক্ষা করা যেত না। ত্বক দেখলে মনে হতো ঝলছে গেছে। তবে নতুন প্রযুক্তিতে ত্বকের ক্ষতি না করেই থেরাপি দেওয়া হয়।

দেশের অসংখ্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রেডিয়েশন থেরাপির উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি রয়েছে। দিতে হবে অভিজ্ঞ রেডিয়শন অনকোলজিস্টের কাছে। অর্থাৎ যাদের যন্ত্রটির চালানোয় দক্ষতা রয়েছে এবং ডোজের পরিমাপ সঠিকভাবে দিতে জানেন।

লেখক : অধ্যাপক এবং পরিচালক

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com