শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তারসহ চার আসামিকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট বিভাগ।
বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মোঃ আতোয়ার রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। তবে তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আসামিদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরার অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তারসহ চার আসামি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্য তিন আসামি হলেন মোঃ ইয়াছিন আলী, তোফাজ্জল হোসেন ও মাহফুজুর রহমান। তারা চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত।
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় সাতক্ষীরার একটি আদালত।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০২ সালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে যান। তবে গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন।
কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মোসলেম উদ্দিন এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। থানা মামলাটি রেকর্ড না করায় একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর তিনি সাতক্ষীরার আমলি আদালতে মামলাটি করেন। এ মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়। এসময় তদন্ত করে পুলিশ তৎকালীন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়।
মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে মামলা বাতিলের আবেদন করেন আসামিরা। এরপর ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করার জন্য সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট আদালতকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট বিভাগ।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর মামলাটির বিচার কাজ নতুন করে শুরু হয়। এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ৫০ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় আদালত।
সূত্র : বাসস