করোনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে, সরকার ঘোষিত ১১ দফা বিধি নিষেধ না মানলে দেশের পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ এমন মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, লকডাউন দিলে দেশের ক্ষতি আমরা সেদিকে যেতে চাই না।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন ও ডায়ালাইসিস ইউনিটের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাণিজ্যমেলাসহ অনেক স্থানেই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এটা খুবই উদ্বেগজনক। নিজের জন্য, দেশের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্ক পরার কোনো বিকল্প নেই। মাস্ক পরতে হবে যাতে আমরা সংক্রমিত না হই।’
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘আমরা মাত্র ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি। এ নির্দেশনা মানলে আমার মনে হয় না লকডাউনের প্রয়োজন আছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন—দেশে প্রায় এক কোটি লোক কিডনির সমস্যায় ভোগে। তার মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার জনের ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। কিডনিজনিত অসুখবিসুখে ২০ থেকে ৩০ হাজার লোক মারাও যায়। সরকারি ও বেসরকারিভাবে আমাদের সব মিলিয়ে সাত-আট হাজারের বেশি ডায়ালাইসিস দেওয়ার সক্ষমতা নেই।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন কোভিড খুবই ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল প্রায় চার হাজার ৪০০ লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিনই এ সংক্রমণের হার দুই-তিন শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সবাইকে টিকা নিতে হবে। আমাদের টিকার কোনো ঘাটতি নেই। এরই মধ্যে সোয়া ১৪ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৭০ লাখ শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছে।’
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন সাংঘাতিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকালও সারা বিশ্বে ৩২ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং সাত হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ছে। আমরা এটা চাই না। আমরা আমাদের দেশের অর্থনীতি সচল এবং জীবনব্যবস্থা ভালো রাখতে চাই। প্রতিটি জেলা হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন এবং দশ বেডের ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন করা হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবির, জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ, সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন বিপ্লব, মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেলসহ অনেকেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থতিতে আক্রান্ত রোগীর শতকরা একজনের আইসিইউএ প্রয়োজন হচ্ছে। যে হারে করোনা বাড়ছে তাতে আউসিইউএ’র সংকট তৈরি হবে। টিকা করেনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরার বিকল্প নেই।