মহান মে দিবস আজ। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের রক্তঝরা দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উত্সর্গ করেছিলেন। ঐদিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিকশেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। এবারের মে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘শ্রমিক-মালিক একতা, উন্নয়নের নিশ্চয়তা’। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে এবং আইএলও-র ছয়টি কোর কনভেনশনসহ ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। এটি একটি বিরল ঘটনা এবং শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের অধিকার রক্ষায় এক অনন্যস্বীকৃতি।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং তিনি শ্রমিকদের জন্যও নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন-মান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে।
প্রতি বছর বাংলাদেশেও মে দিবসটি পালিত হয়। নানা আয়োজনে দিনটি পালন করে থাকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত দুই বছর কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও এবার দিবসটি পালন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বেসরকারিভাবেও নেয়া হয়েছে নান উদ্যোগ। করা হবে সভা-সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই দিনে বাংলাদেশে প্রতি বছরই ছুটি থাকে। এবার মে দিবসের ছুটি ও ঈদের ছুটি একসাথে পড়েছে।