আন্দোলনের নামে অরাজকতা করলে বিএনপিকে কঠোর জবাব দেবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির নাশকতা ঠেকাতে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশও দেন তিনি। কাদের অভিযোগ করেন, ছাত্রদলকে দিয়ে মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলায় করণীয় ঠিক করতে ও দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিতে মঙ্গলবার (৩১ মে) বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভা করে আওয়ামী লীগ।
সভায় ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয় কেন্দ্রের কাছ থেকে। সিদ্ধান্ত হয় বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা।
ছাত্রলীগের ওপর ছাত্রদলের হামলা এবং ৭৫ এর হাতিয়ার গর্জে তোলার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়া নিয়ে সভায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
এ সময় ক্ষমতাসীন দলে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে ছাত্রদল, যা শিখিয়ে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। কাদের এর পরিণতি ভালো হবে না উল্লেখ করে, যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সারাদেশে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচি দিলে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে, আর আমরা কি বসে বসে তামাক খাবো?
সরকার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে এমন অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, আমার সামনে নেত্রীকে বলছেন, পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। এই কথা শুনলে তরুণদের কি মাথা ঠিক থাকে। সন্ত্রাসীকে কি বাধা দেব না?
তিনি বলেন, ফখরুল সাহেবরা এসব স্লোগান শিখিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিলে ছাত্রলীগ কি চুপ করে বসে থাকবে? নেত্রীকে অপমান করা হচ্ছে। এই অপমান কি আমরা সইতে পারি? এসব কটূক্তির প্রতিবাদ ছাত্রলীগ করেছে।
আন্দোলন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের হুমকির জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেখব কত ধানে কত চাল। সবকিছুর একটা শেষ আছে। বাড়াবাড়ি ভালো নয়। মির্জা ফখরুল, বলে দিচ্ছি আগুন নিয়ে খেলবেন না। আগুন নিয়ে খেললে পরিণতি হবে ভয়াবহ।
কাদের আরো বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেবেন আমাদের সামনে। আওয়ামী লীগ কি মরে গেছে? আমরা কি রাজপথ কাউকে ইজারা দিয়েছি? আওয়ামী লীগ রাজপথ থেকে এসেছে, রাজপথেই আছে।
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলনের নামে আগুন সন্ত্রাসের জবাব রাজপথে দেয়া হবে। সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে।
কাদের বলেন, আগামী ২৫ জুন পদ্মাসেতুর উদ্বোধনে ইউনিয়ন পর্যন্ত উৎসব হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ছাত্রদলকে দিয়ে রাজপথে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে- রাজপথ কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এর উপযুক্ত জবাব দেবে।
পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপিকে দাওয়াত দেয়া হবে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করায় বিএনপির বুকে বিষজ্বালা উপচে পড়ছে। তবুও পদ্মা সেতুর অনুষ্ঠানে তাদের দাওয়াত দেয়া হবে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে লাভ হবে না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন জাদুঘরে। আগামী নির্বাচন হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার তাদের সহযোগিতা করবে।
শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ৪ জুন সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডেকেছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনগুলোও আলাদা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
পদ্মাসেতুর উদ্বোধনকে স্মরণীয় করতে ২৪ ও ২৫ জুন সারাদেশের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত উদযাপনের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।