বিয়েবাড়িতে বর-কনেকে দেখতে শত শত মানুষের ভিড়। কারণ বর আল-আমিন লম্বায় ৪৪ ইঞ্চি, আর কনে শাম্মি আক্তার ৩৩ ইঞ্চি। পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলায় জাঁকজমকভাবে বামন আল-আমিনের সঙ্গে বামন শাম্মির বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শর্ষিনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মো. আল আমিনের (২২) সঙ্গে একই উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শাহজাহানের কন্যা শাম্মি আক্তারের (২০) বিয়ের কথাই বলা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিবাহের অনুষ্ঠান অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। বর আল আমিন লম্বায় ৪৪ ইঞ্চি এবং কনে শাম্মি লম্বায় ৩৩ ইঞ্চি। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আল আমিন তৃতীয় এবং দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শাম্মি সবার বড়। শাম্মি উপজেলার কলেজিয়েট একাডেমিতে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার নানা শামসুল হক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
কয়েক দিন আগেও আল আমিনকে কেউ তেমন একটা গুরুত্ব দিতেন না। বাওন (বামন) বলে খেলাধুলা বা আড্ডায় ছিল না তার কোনো বন্ধুবান্ধব। তাকে ঘিরে ছিল না কারো কোনো আগ্রহ। সেই আল আমিনকে নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে তার পাড়ার প্রতিটি ঘরে। এই আলোচনা অল্প সময়ের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে গোটা উপজেলায়। শুধুই কী মানুষের মুখে মুখে, একপর্যায়ে আল আমিনের কাণ্ড ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সবার মুখে একই কথা- আল আমিন বিয়ে করেছেন, তা-ও আবার তার মতো আরেক বামন পাত্রীকে।
করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার দেড় শতাধিক গণ্যমান্য লোকদের দাওয়াত করে কনেপক্ষ। কিন্তু বরকে একনজর দেখার জন্য কনের বাড়িতে ওই এলাকার বহু লোক ভিড় জমান। এক লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। উভয় পরিবারের লোকজনসহ পাড়া-প্রতিবেশী সবাই উৎফুল্লভাবে কনের বাড়ি থেকে বর-কনেকে বিদায় জানান। রাতে বউ নিয়ে আল-আমিন বাড়ি ফিরলে এলাকার শত শত উৎসুক লোকজন বর-কনেকে একনজর দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় জমান। নবদম্পতিকে আশীর্বাদ জানানোর পাশাপাশি তাদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন অনেকেই। আল-আমিন ও শাম্মির এ বিয়েকে ঘিরে উভয় পরিবারের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে।
নবদম্পতি আল-আমিন ও শাম্মি আক্তার বলেন, আমরা সুখী হতে চাই। সমাজের অনেকেই আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা মজা করে থাকেন। এগুলো মাঝে মাঝে খারাপ লাগলেও আমরা পাত্তা দিচ্ছি না। আমাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়, এজন্য সকলের দোয়া চাই ।