নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা আয়কর গরমিলের তিন মামলায় ধার্য প্রায় ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, তিন মামলায় ড. ইউনূসের কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত।
তাকে এনবিআরকে ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করতেই হবে।
এর আগে গত ২৪ মে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
আয়কর দাবি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দেয়া নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আনা তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার শুনানি শেষে ৩১ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।
এ সময় প্রায় ১৫ কোটি টাকারও বেশি কর দাবি করে এনবিআরের ওই নোটিশগুলোর বৈধতা নিয়ে রায়ের জন্য ৩১ মে দিন রাখেন উচ্চ আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে এক কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার টাকা দানকর দাবি করা হয়।
আর ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর।
দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস। আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এই কর দাবি করতে পারে না বলে দাবি করা হয়। ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর ইউনূসের আবেদন খারিজ করে আদেশ দেয় আপিল ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৫ সালে তিনি হাইকোর্টে তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।
ওই মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করে হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার এই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামী ৩১ মে দিন ধার্য করে আদেশ দেন উচ্চ আদালত।