বিশিষ্ট নজরুল গবেষক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
৮৭ বছর বয়সী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম পেটে ব্যথা নিয়ে গত ৭ অক্টোবর ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর ফুসফুসে পানি জমার বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন থেকে বিএসএমএমইউর বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি মেডিসিন) বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মোশাররফ হোসেনের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। পরিবারের সদস্যরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যেতে চাইলেও রফিকুল ইসলাম তাতে সায় দেননি।
হাসপাতালের ডিউটি অফিসার ডা. অভিজিৎ গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এই অধ্যাপকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকার্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শোক প্রকাশ করেছেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরাও। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক। সেই সঙ্গে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। সেই সময়ের দুর্লভ কিছু আলোকচিত্রও তুলেছিলেন তিনি। বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থসহ প্রায় ৩০টি বই লেখা এবং সম্পাদনা করেছেন রফিকুল ইসলাম।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম একুশে পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। এছাড়া এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকেও ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।