বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এক চরম সঙ্কটময় মুহূর্ত পার করছেন। অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসায় বিদেশে পাঠানোর জন্য বারবার দাবি করা সত্ত্বেও সরকার রহস্যজনকভাবে নিরব থাকছে। পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এদেশে সম্ভব নয়, তাঁকে বাঁচাতে হলে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা জরুরি। যতই দিন যাচ্ছে তাঁর শারীরিক অবস্থার ততই অবনতি ঘটছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রতীক খালেদা জিয়ার মুমূর্ষু অবস্থাকে কোনোভাবেই বিবেচনায় না নিয়ে সরকার এক ভয়ানক মনুষ্যত্বহীন চক্রান্তে মেতে উঠেছে। তাঁকে পৃথিবী থেকে বিদায় করার জন্যই তাঁর চিকিৎসা নিয়ে সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অথচ খালেদা জিয়ার মতো জীবনসংগ্রামকে এখনও কেউ অতিক্রম করতে পারেনি। এদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসে এক সমুজ্জল নাম খালেদা জিয়া। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে তিনি যে রাজনৈতিক তরঙ্গ তৈরি করেছিলেন তা আজও গণতন্ত্রহারা মানুষকে আন্দোলিত করে। খালেদা জিয়ার ক্ষমতা জনগণ থেকে উৎসারিত, ষড়যন্ত্রের কোনো অন্ধকার প্রকোষ্ঠ থেকে নয়।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘জনগণের এই মহিয়সী নেত্রী এখন নির্যাতিত, নিপীড়িত, চিকিৎসাহীনতায় মুমূর্ষু। এই দৃষ্টান্তও পৃথিবীতে বিরল। খালেদা জিয়া বন্দি জীবনযাপন করছেন দেশেরই এক গণতন্ত্র ও সভ্যতাবিরোধী শক্তির মাস্টারপ্ল্যানের দ্বারা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বঞ্চিত হচ্ছেন মৌলিক মানবাধিকার থেকে। দেশের প্রচলিত আইনেই বিদেশে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব। দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবিকেও অগ্রাহ্য করে সরকার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিঃশেষ করে দেওয়ার আয়োজনে ব্যস্ত।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জনগণের সর্বোচ্চ ভালবাসা অর্জন করেছেন খালেদা জিয়া। এই ভালবাসার শক্তিকে বিকারগ্রস্ত অগণতান্ত্রিক দানবীয় শক্তি কখনোই পরাজিত করতে পারবে না। যে ঝুঁকি ও সাহস নিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, তাঁকে ধ্বংস করা যাবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপিনেতা আলী নেওয়াজ, এবায়দুল হক চানসহ অন্যান্যরা।