বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সরকার তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় বসে থেকে বলেন আমেরিকায় না গেলে কী হবে?’
শনিবার (৩০ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব একথা বলেন আমীর খসরু।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মামলা ও সাজার প্রতিবাদে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এবং ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বেগম খালেদা জিয়ার স্থাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘তাকে বাইরে যেতে দেয়া হছে না। তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখনো নেত্রীর মুক্তি নাই, চিকিৎসা নাই। তার স্বাস্থ্যের অবনতির মাধ্যমে মৃত্যুর দিলে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আজ দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের নেত্রীকে আবারো জেলে যেতে হবে। তারপর কোর্টের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। তার মানে আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসাবঞ্চিত করার এই দায়িত্বভার সরকারপ্রধানকেই নিতে হবে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, সরকারপ্রধান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়াকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বাঁচতে চায়। আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করতে রাজি নয় তারা। আমরা যখন রাস্তায় চলাফেরা করি তখন আমাদের জিজ্ঞেস করে- আর কয়দিন?’
‘বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোরও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। ভিসানীতি ঘোষণা হয়েছে, চালুও হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকজনের সাথে মিটিং করে ব্রাসেলসে ফিরে গিয়ে বলেছে, তারা বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারণ এ দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই,’ বলেন আমীর খসরু।
দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এ দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য।
বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘মার্কিন ভিসানীতিতে বিচার বিভাগকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্বের কোনো দেশে দেখেছেন বিচারকদের ভিসানীতির আওতায় এনেছে?’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গার্মেন্টসের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হয় আমেরিকায়। তারপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই ব্যবসা চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই শিল্প ধ্বংস হয়ে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের জেলে যাওয়ার কারণ একটাই- যে কারণে খালেদা জিয়া জেলে আছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে আছেন। যে কারণে হাজার হাজার মামলা। অনেকের শাস্তি হয়েছে। আরো অনেককে শাস্তি দিয়ে এবং জনগণকে নির্বাচনের বাইরে রেখে আবারো ক্ষমতায় যেতে চায় আওয়ামী লীগ।’
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের সঞ্চালনা আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দ। এ সময় ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।