আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির পর কোভিড টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া আপাতত বন্ধ হচ্ছে, তার আগ পর্যন্ত নিবন্ধন ছাড়াই নেওয়া যাবে টিকা।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে অধিদপ্তরের অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. শামসুল হক একথা জানান।
এক দিন আগেই অধিদপ্তর জানিয়েছিল, ২৬ ফেব্রুয়ারি একদিনে এক কোটি ডোজ টিকা দিয়ে আপাতত কোভিড টিকার প্রথম ডোজ প্রয়োগ বন্ধ করা হবে। এরপর দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ দেওয়া চলবে।
শামসুল হক বুধবার বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যে কেউ যে কোনো কেন্দ্রে গিয়ে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
“এখন থেকে কেউ যদি প্রথম ডোজের টিকা নিতে আসে. তার যদি টিকার জন্য নিবন্ধন না থাকে, জন্মনিবন্ধন বা কোনোকিছুই না থাকে। শুধু লাইন লিস্টিং করে তার একটা মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকা নেবেন।”
গত বছর দেশে টিকাদান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করে টিকা নিতে হচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ কিংবা পাসপোর্ট নম্বর নিয়ে নিবন্ধনের পর মোবাইলে এসএমএস আসে টিকার দিন জানিয়ে, তারপর টিকা নেওয়া যায়।
নিবন্ধন ছাড়া টিকা প্রয়োগ হলে তার তথ্য কীভাবে সংরক্ষিত হবে- সেই প্রশ্নে শামসুল হকের উত্তর, টিকা নেওয়ার পর টিকাগ্রহীতাকে একটি কার্ড দেওয়া হবে। ওই কার্ড ব্যবহার করে পরবর্তীতে টিকার জন্য নিবন্ধন করা যাবে।
“এই কার্ড আমরা ছাপিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি। যারা টিকা নেবেন তাদের যেহেতু কোনো ধরনের ডকুমেন্ট নাই, এই কার্ডটাই তার টিকার ডকুমেন্ট্ হিসেবে কাজ করবে। টিকা নেওয়ার পরও তিনি ওই কার্ড নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশনের সময় এই কার্ডটা প্রমাণ দেবে তিনি ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন।”
শামসুল হক জানান, দেশে ১২ বছরের বেশি ১৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে ১২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এতে ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাপকিভিত্তিক টিকাদান কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে নানা কার্যক্রম নেওয়ার কথাও জানান ডা. শামসুল হক।
প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি করে কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। উপজেলা পর্যায়ের চলমান কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে প্রতিটি উপজেলায় পাঁচটি করে অতিরিক্ত টিম থাকবে। একইভাবে জেলা পর্যায়েও টিকা কেন্দ্রগুলো চালু রাখার পাশাপাশি অতিরিক্ত ২০টি টিম থাকবে।
পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি, ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ৩০টি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ২৪টি, বরিশাল সিলেট, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ৬০টি এবং খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ২৫টি করে দল থাকবে।
শামসুল বলেন, “এসব টিম ভ্রাম্যমাণ দল হিসেবে কাজ করবে। যেখানে লোকসমাগম বেশি সেখানে গিয়ে টিকা দেবে।
“আমাদের মূল লক্ষ্য ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা এবং পৌরসভা পর্যায়ের প্রতিটি টিম ৩০০ ডোজ। সিটি করপোরেশন পর্যায়ে প্রতিটি টিম ৫০০ ডোজ টিকা দেবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, মঙ্গলবার পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজারের বেশি মানুষকে। তাদের মধ্যে ৭ কোটি ২৮ লাখ ৮৩ হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ২৯ লাখ ৯২ হাজারের বেশি জন।