ভোলার ইলিশা ফেরি ঘাটে দীর্ঘ যানজটের কারণে বিপাকে পড়েছেন কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে তরমুজ ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রতিদিনই ট্রাকে করে নেওয়া তরমুজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ১১টা পর্যন্ত ঘাটে দেখা গেছে, উভয় পাড়ে পারাপারের অপেক্ষায় আছে অন্তত ১৪৫টি গাড়ি। এর মধ্যে ভোলা অংশে ৬৫টি গাড়ি অপেক্ষমান আছে বলে জানিয়েছেন ফেরির ইনচার্জ মো. পারভেজ খান।
তিনি বলেন, পারাপারের অপেক্ষায় থাকা গাড়িগুলোর মধ্যে ৩২টিতে কাঁচামাল আছে। তবে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে কাচামালের গাড়ি পারাপার করছি। এখানে চারটি ফেরি চলাচল করছে। আশা করছি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ জট দূর করা সম্ভব হবে। তবে ট্রাক-শ্রমিক ও চালকদের অভিযোগ, ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরির দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
তরমুজ বহনকারী কাভার্ডভ্যানের চালক বাচ্চু মিয়া জানান, গত তিন দিন আগে ভোলার চরফ্যাশন থেকে দুই হাজার ৮০০ পিচ তরমুজ নিয়ে রওনা হন তিনি। এই তরমুজ হবিগঞ্জের মাধবপুরে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় ধরে ইলিশা ফেরিঘাটে থেকেও পারাপার হতে পারিনি। এতে করে অনেক তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো তরমুজ পঁচে যাওয়ায় নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
আর তরমুজের এমন দূরঅবস্থা দেখে কাভার্ড ভ্যানে থাকা তরমুজ ব্যবসায়ী গাড়ি ভাড়া ও লোকশানের আশঙ্কায় গাড়িতে তরমুজ রেখেই চলে যান। তবে যাওয়ার সময় তাকে তরমুজ বিক্রি করে গাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে গেছেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি দুই হাজার ৮০০ পিচ তরমুজ লটে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করে দেন।
জানা গেছে, দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে দ্বীপজেলা ভোলার যেহাযোগের সহজ মাধ্যম ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি সার্ভিস। এ রুটে চারটি ফেরি চলাচল করছে। জেলা কৃষিবিভাগ জানিয়েছে, এ বছর জেলায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এগুলো বাইরের জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হয়।
তরমুজ ব্যবসায়ী মোতালেব ও জসিম জানান, ভোলা লক্ষীপুর রুটে তরমুজের মৌসুমে অসংখ্য তরমুজবাহী গাড়ি পার হয়। এ মৌসুমেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু ইলিশা ফেরি ঘাটে এসেই তাদের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়। কাঁচামাল রক্ষায় আগে তরমুজের গাড়ি পার করার দাবি জানান তারা। তবে ফেরি ইনচার্জ বলেন, ঘাটে বর্তমানে যে জট আছে তা দ্রুত কেটে যাবে।