পদ্মা সেতু উদ্বোধনর পর থেকেই চিরচেনা সদরঘাটের ব্যস্ততা অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। বিকাল থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ভাণ্ডারিয়া, শরীয়তপুর, মাদারীপুর যাওয়ার জন্য যাত্রীদের যে ভিড় থাকত, সেটা আর নেই। যাত্রীরা এখন এসব অঞ্চলে যাওয়ার জন্য পদ্মা সেতুকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।
সদরঘাটকে কেন্দ্র করে এই এলাকা সব সময় সরগরম থাকত। অনেক দিনমজুরের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যমে ছিল যাত্রীদের মালামাল আনা নেওয়া। খুচরা মালামাল বিক্রি করে সংসার চালাত একটি বড় অংশ। এসব ব্যবসায়ীরা কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন। লঞ্চের কর্মচারীদের মধ্যেও নানা শঙ্কা কাজ করছে। তারা মনে করছেন, যাত্রী কমলে লঞ্চের আয় কমবে। এতে চাকরি হারানোর শঙ্কায় রযেছেন তারা। এ অবস্থায় যাত্রী টানতে ভাড়া কমিয়েছে বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো। কেবিন থেকে ডেক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাড়া কমেছে সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাত্রীও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে বেশি কমছে কেবিনের যাত্রী। ডেকে বসে আসা যাওয়া যাত্রী তেমন একটা কমেনি বলে জানান তারা।
আবার অনেকে মনে করেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর এখন যাত্রী কিছুটা কমলেও ধীরে ধীরে আবারও স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কারণ যারা সপরিবারে বাড়ি যাবেন তারা লঞ্চকেই বেছেই নেবেন। কারণ কম টাকায় তারা বাড়ি যেতে পারবেন। আর লঞ্চে আরাম আয়েশ করেই যাওয়া যায়। মেট্রোরেল যখন সদরঘাট পর্যন্ত আসা যাওয়া করবে তখন লঞ্চের যাত্রী আরো বাড়বে বলে মনে করেন কেউ কেউ।
বর্তমানে সারা দেশে মোট ১০৭টি নৌপথ রয়েছে, যার মধ্যে ৪৩টি পথ ঢাকার সদরঘাট থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের সংযোগকারী। এই ৪৩টি নৌ-রুটে চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা প্রায় ২০০। আর শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি ও বাংলাবাজারে চলাচল করে ৮৭টি লঞ্চ।