সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ৫ আগস্ট গণভবনে গিয়ে তার পদত্যাগের জন্য পা ধরেছিলেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। রোববার (২৫ মে) ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সামনে লিখিত এক তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এ তথ্য পাঠ করে শোনান তিনি।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন শেখ হাসিনা। অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও আরও রক্তপাতের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন। ৪ আগস্ট (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা তিনি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন।
এদিকে আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রোববার (২৫ মে) প্রধান কৌঁসুলির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এদিন আসামিরা নিজেরা বা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেননি। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৩ জুন দিন ঠিক করেছেন।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি গ্রহণ করে ১৫ মে’র মধ্যে তাদের লিখিত জবাব দাখিলের নির্দেশ দেয়। তবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না দেওয়ায়, আদালত ২৫ মে দুই আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে তারা হাজির হননি বলে আদালতকে অবহিত করেন তাজুল ইসলাম।
তিনি ট্রাইব্যুনালকে বলেন, শেখ হাসিনা ও শাকিলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি হয়েছে। কিন্তু কোনো জবাব দাখিল করেননি। এরপর হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। তারা হাজির হননি। তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারির পদক্ষেপ নেওয়া হোক, যাতে অন্যান্য আদালতে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
তাজুল বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে যেন ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়। যদি হাজির না হয়, তখন ট্রাইব্যুনালে যেন পরবর্তী আদেশ দেওয়া হয়। এরপরই ট্রাইব্যুনাল দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করতে রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন।