শুক্রবার, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদী হাসে ধান খাওয়া কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ২ গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে ধানের শীষের প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপনের শুভেচ্ছা বিনিময আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং এসিল্যান্ডের সাথে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন মতবিনিময় সভা র‍্যাবের সাবেক ডিজি হারুন পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা ১৬ নভেম্বর এইচএসসির খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ কালমেগির আঘাতে ফিলিপাইনে ১১৪ জনের মৃত্যু, এগোচ্ছে ভিয়েতনামের দিকে বিপিএলের দলগুলোর নাম জানাল বিসিবি ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৩৪

নির্বাসিত জীবনের চিরমুক্তি, না ফেরার দেশে কবি দাউদ হায়দার

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১২৯ বার পঠিত

‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’- আলোচিত এ পংক্তিমালার কবি দাউদ হায়দার আর নেই। ৭৩ বছর বয়সে গতকাল শনিবার রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে তিনি মারা যান।

খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার অনুজ ও দুই কবি- জাহিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার।

আরিফ হায়দার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সময় ২৭ এপ্রিল রাত দেড়টায় দাউদ হায়দার মারা গেছেন। এখন তাকে হিমঘরে রাখা হয়েছে। তার মরদেহ কী করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

এছাড়াও কবির ভাতিজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশটির স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২০ মিনিটে চাচা মারা গেছেন।’

১৯৭৪ এর ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হলে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে এ নিয়ে আন্দোলন শুরু হলে সে বছর ১১ মার্চ তাকে আটক করে পুলিশ। ২০ মে মুক্তি দেওয়া হলেও কবিকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি তখনকার সরকার। পরদিন সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে একপ্রকার খালি হাতে কলকাতায় পাঠানো হয়।

এ নিয়ে কবি লিখেছিলেন, সে সময় তার কাছে ছিল মাত্র ৬০ পয়সা, কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগ, আর ছিল কবিতার বই, দুজোড়া শার্ট, প্যান্ট, স্লিপার আর টুথব্রাশ।

তিনি লেখেন, ‘আমার কোনো উপায় ছিল না। মৌলবাদীরা আমাকে মেরেই ফেলত। সরকারও হয়ত আমার মৃত্যু কামনা করছিল।’

১৯৭৪ সালে দেশ ছাড়ার পর কয়েকবছর কলকাতায় কাটিয়ে ১৯৮৭ সালে সেখান থেকে জার্মানিতে চলে যান দাউদ হায়দার। এরপর থেকে সেখানেই ছিলেন তিনি। জানা গেছে, নোবেলজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস এবং জার্মানির তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলরের সহযোগিতায় তিনি জার্মানিতে আশ্রয় নেন।

চিরকুমার দাউদ হায়দার আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গতবছর ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় আঘাত পান। সে সময় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতেও নিতে হয়। এরপর হাসপাতাল ছাড়লেও আর সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেননি কবি।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পাবনায় দাউদ হায়দারের জন্ম। তিনি একাধারে কবি, লেখক ও সাংবাদিক।

দেশান্তরী হওয়ার গভীর বেদনার কথা তিনি লিখেছেন ‘তোমার কথা’ কবিতায়। ১৯৮৩ সালে কলকাতায় অবস্থানকালে তিনি এ কবিতা লিখেছিলেন।

মাঝে মাঝে মনে হয়

অসীম শূন্যের ভেতর উড়ে যাই।

মেঘের মতন ভেসে ভেসে, একবার

বাংলাদেশে ঘুরে আসি।

মনে হয়, মনুমেন্টের চূড়ায় উঠে

চিৎকার ক’রে

আকাশ ফাটিয়ে বলি;

দেখো, সীমান্তে ওইপাশে আমার ঘর

এইখানে আমি একা, ভীনদেশী।

সত্তর দশকের শুরুর দিকে দাউদ হায়দার দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি দাউদ হায়দারের কোন এক কবিতাকে “দ্যা বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া” সম্মানে ভুষিত করেছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com