সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হাসিবুর রহমান (৩৪) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ১৫শ ৬ জনের নামে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে নিহতের চাচা ফুয়াদ হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা (নং-১৪) দায়ের করেন। সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজারভুক্ত আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়াও রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন আর রশিদ ও সাভার আশুলিয়ায় গণহত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি।
ওসি জুয়েল মিঞা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পরস্পরের যোগসাজসে হত্যা এবং হত্যার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়েছে জানিয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এদের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফিকে এবং পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে।
উভয়ই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বলেও জানান জুয়েল মিঞা। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের খবর শুনে ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল নিয়ে সাভার থানার দিকে যাওয়ার সময় পথে গুলিবিদ্ধ হন হাসিবুর রহমান।পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ আগস্ট তিনি মারা যান।
নিহত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান (১৮) মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার কালাইপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ঢালির ছেলে।