শুক্রবার, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশে এখনকার পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে: ভারতীয় কূটনীতিক

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪ বার পঠিত

সব ঠিকঠাক থাকলেও পরিকল্পনামাফিক এগোলে বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আর মাত্র মাস পাঁচেকের মধ্যেই। দেশটিতে এর আগেকার পর পর তিনটি নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে, এমনকি ভারতের সমর্থনেই শেখ হাসিনা সরকার তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে উতরে যেতে পেরেছে– এমন অভিযোগও আছে।

কিন্তু এবারে বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে ভারতের মনোভাব এখন কী হতে পারে? বা আরও স্পষ্ট করে বললে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে ঠিক কী হওয়া উচিত?

বস্তুত গত এক বছরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বারবার বলেছে, তারা চায় বাংলাদেশে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং সেই নির্বাচন হোক ‘গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’।

তবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। এবং পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে তাদের ‘নৌকা’ প্রতীকে লড়তে পারবে— এমন কোনো সম্ভাবনাই এ মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না।

কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগবিহীন কোনো নির্বাচনকে ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক মনে করবে কিনা সে বিষয়ে এখনো অস্পষ্ট রয়েছে।

এর পাশাপাশি ভারতের একাডেমিক মহলে, থিংকট্যাংক সার্কিটে বা বৃহত্তর সিভিল সোসাইটিতেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত। আর সেখানেও উঠে আসছে নানা ধরনের মতামত।

আর সব কিছুই এমন একসময়ে ঘটছে, যখন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার দলের শীর্ষ নেতাদের একটি বড় অংশ ভারতে অবস্থান করছেন।

এ পটভূমিতেই দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার (আইআইসি), যেটি ভারতের বৈদেশিক নানা ইস্যুতে চর্চার একটি প্রধান কেন্দ্র। সম্প্রতি বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আয়োজন করেছিল একটি আলোচনাসভার।

ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের দিক থেকে কী ধরনের ‘প্রস্তুতি’ কাঙ্ক্ষিত, সেই প্রশ্নকে ঘিরেই বিশ্লেষকরা সেখানে নানা সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা করেছেন, যা থেকে ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষকদের মনোভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়– এই প্রতিবেদনে থাকছে তারই সারসংক্ষেপ।

‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’

ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় আমলা ও প্রসার ভারতী বোর্ডের সাবেক সিইও জহর সরকার বিশ্বাস মনে করেন, এ মুহূর্তে কোনো ‘প্ররোচনায়’ পা না দিয়ে ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশের নির্বাচনে কী ফলাফল হয়, সেটি দেখার জন্য অপেক্ষা করা।

—আইআইসির আলোচনাসভার সঞ্চালকও ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাবেক সংসদ সদস্য।

জহর সরকার বলেছেন, বাংলাদেশে এখনকার প্রেজেন্ট পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে, বুঝতে হবে। বোঝার থেকেও বেশি কথা হলো— মানতে হবে। আসলে হঠাৎ (পালাবদল) হয়ে যাওয়াতে (দিল্লির) একটা শকের মতো হয়ে গিয়েছিল … এখন মেনে নিতে হবে যে, বাংলাদেশের ভোটাররা যাকেই তাদের শাসক হিসেবে চিহ্নিত করবে, তাদেরকে আমাদের মানতে হবে।

কিন্তু বাংলাদেশের নতুন সরকার যদি ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন না হয়, সেই ঝুঁকির দিকটা কি ভারত মাথায় রাখবে না?

এমন প্রশ্নে জহর সরকার জবাব দেন, এটা ঠিকই। এর মধ্যে একটা পয়েন্ট অব ভিউ এসে যায়, সেই সরকার যদি আমাদের বিরুদ্ধে হয় তখন কী হবে? আরে এসব কথা পরের কথা… এগুলো পরের কথা… কে আসবে কে যাবে, তা কেউ জানে না। আসলে হচ্ছে কী, (বাংলাদেশে) কিছু ক্ষ্যাপা লোক টুকটাক করে কিছু বলে ফেলছে, যার বেসিসে সঙ্গে সঙ্গে একটা রিঅ্যাকশন হচ্ছে, তাতে মানুষ ক্ষেপে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আসলে মনে রাখতে হবে (বাংলাদেশে) এখনকার যে সরকার সেটা একটা কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট, তাদের এত বেশি বলার বা খোঁচানোরও প্রয়োজনীয়তা নেই, তারা তো ইলেকশনটা করে নিলেই পারে।

ফলে এখন আর কয়েকটা মাস ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে ভারতের উচিত কে ক্ষমতায় আসে সেটা দেখা এবং তাদের বিষয়ে নীতি স্থির করা— এটাই তার অভিমত।

তিনি আরও বলেন, কেননা এটা তো একটা স্টপগ্যাপ সরকার। আসল সরকার আসুক, তার পরে তাদের সাথে কী বোঝাপড়া করা হবে, আমাদের একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে, সে সম্পর্কটা কতখানি বজায় রাখা যায় সেটা তখন না হয় আমরা দেখব?

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com