সাভারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আলিফ আহাম্মেদ সিয়াম (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৯২ জনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা।
তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে একই উদ্দেশ্যে পরস্পরের যোগসাজসে দাঙ্গা, হাঙ্গামা, মারধর, গুলিবর্ষণ করে হত্যা, হত্যার হুকুম এবং প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ দাবিতে লংমার্চে অংশগ্রহণের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও জনতা সাভার থেকে লংমার্চ করে ঢাকা অভিমুখে রওনা করে।
দুপুরে ২টার দিকে লংমার্চটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে সাভার বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করা হয়।এতে মিছিলের উগ্রভাগে থাকা আলিফ আহাম্মেদ সিয়াম মাথায় গুলিবিদ্ধ হন এবং গুলি কপালে লেগে পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে যায়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুলিবিদ্ধ আলিফকে এনাম মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায়গত ৭ আগস্ট বিকেলে সে মারা যায়।
এ ঘটনায় মামলা করেছেন নিহত সিয়ামের বাবা বুলবুল কবির। তিনি বাগেরহাট জেলার বড় বাশবাড়ীয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান হাওলাদারের ছেলে। আর নিহত আলিফ আহমেদ সিয়াম সাভার ডেইরি ফার্ম উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলার অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, তৎকালীন সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহুল চন্দ, ঢাকার তৎকালীন পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফি, সাহিদুর রহমান, সাভার মডেল থানার ওসি শাহ জামান, এসআই সুদীপ ঘোষ, হারুন অর রশিদ, সাব্বির হোসেন, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, তার ভাই তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকরুল আলম সমর, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম,সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের কথিত উপদেষ্টা জাকির হোসেন, ওরফে ট্যাপা জাকির, ওরফে, হিজরা জাকির ওরফে ভাগিনা জাকির, সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল গনি, তার ছেলে আশুলিয়া থানা লীগের সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, তার ভাই মেহেদী হাসান তুষার, সবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীবের পিএস মো. রাজু, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ চৌধুরী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূরে আলম সিদ্দিকী নিউটন, নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা, ঢাকা জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায় মিজানুর রহমান মিজান ওরফে জি এস মিজান, সাভার উপজেলার ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন টিপু, ভারপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন লিটন, আহাম্মেদ ফয়সাল নাইম তুর্জ।