ছোট-বড় সবাইকে ভালোবাসার অসামান্য গুণ সবার থাকে না। এটা যারা পারেন- তাদেরই অন্যরা ভালোবাসেন, পছন্দ করেন। এ ভালোবাসার কারণেই তিনি যুগের পর যুগ থাকেন মানুষের হৃদয়ে। তেমনি একজন অভিনেত্রী ববিতা। আজ এই কিংবদন্তির জন্মদিন। ১৯৫৩ সালের এই দিনে বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা নিজামুদ্দীন আতাউর একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা বি. জে. আরা চিকিৎসক। বাবার চাকরি সূত্রে তারা তখন বাগেরহাটে থাকতেন। তার পৈতৃক বাড়ি যশোরে। শৈশব এবং কৈশোরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউসের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে। তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় বোন সুচন্দা চলচ্চিত্রাভিনেত্রী, বড় ভাই শহীদুল ইসলাম ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেজ ভাই ইকবাল ইসলাম বৈমানিক, ছোট বোন চম্পা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং ছোট ভাই ফেরদৌস ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। এ ছাড়াও অভিনেতা ওমর সানী তার ভাগ্নে এবং অভিনেতা রিয়াজ তার চাচাতো ভাই। চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান তার ভগ্নিপতি। ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক কানাডায় পড়াশোনা করেন। অনিক কানাডা থাকেন বিধায় বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ চলচ্চিত্রাঙ্গনের এই পথিকৃৎ তার জন্মদিন কখনো ঢাকায় আবার কখনো কানাডাতেই উদযাপন করেন। তবে এবার জন্মদিনের সময়টাতে কানাডাতেই আছেন। তিনি বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক মানুষকে কোনো না কোনো যোগ্যতা দিয়েছেন। সময় থাকতে তার সদ্ব্যবহার করা উচিত। জীবনটা সাদামাটা না করে রঙিন করা উচিত। এমন কিছু কর্ম করে যাওয়া উচিত, যেগুলোর মাধ্যমে মানুষ মনে রাখেন। আমিও হয়তো চেষ্টা করেছি এমন কিছু কর্ম রেখে যেতে, যেগুলোর কারণে আমাকে মানুষ মনে রাখেন।’
‘একজন আধুনিক পরিপূর্ণ মানুষের প্রতিচ্ছবি ববিতা’- কথাটি বলেছিলেন আমজাদ হোসেন। এ বয়সেও তিনি স্মার্ট। পোশাক-পরিচ্ছদে এখনো অনেক রুচিশীল। এ বয়সেও প্রচুর পড়াশোনা করেন এ অভিনেত্রী। যেখানেই যান একটি কলম ও নোটবুক সঙ্গে নিয়ে যান। যে কোনো অজানা তথ্য জানলেই টুকে নেন নোটবুকে। এ কারণে তথ্যউপাত্ত দিয়ে তিনি মানুষকে চমকে দিতে পারেন। সিনেমা দেখার নেশা থাকলেও কাজ করার ইচ্ছে ববিতার কোনো দিনই ছিল না। তারপরও করতে হয়েছে দুলাভাই জহির রায়হানের জোরাজুরিতে। ববিতা বলেন, ‘জহির ভাই যখন সংসার ছবিতে অভিনয়ের কথা বললেন, আমি বেঁকে বসলাম, কিছুতেই অভিনয় করব না। তখন আমার আম্মা বললেন, জামাই মানুষ, উনি চাইছেন, তুই না করলে মন খারাপ করবেন। সুচন্দা আপাও বললেন, তোর দুলাভাই ছবির ডিরেক্টর। আমি নিজেও তো অভিনয় করছি। কেন করবি না? তুই যদি না করিস, তাহলে খুব খারাপ দেখা যায়। তুই কর। সবার চাপাচাপিতে আমি রাজি হলাম। তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। ছবিতে রাজ্জাক ভাই আমার বাবা, সুচন্দা আপা আমার মা। খেলার ছলেই আমি কাজটা করে ফেললাম। আমার পারিবারিক নাম পপি হলেও সংসার ছবিতে আমার নাম দেওয়া হয়েছিল সুবর্ণা। এরপর ছবিটি মুক্তি পেল এবং সুপার ফ্লপ।’