ম্যাচের ১৫ মিনিটের মাথায়ই গোল দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছিলেন তৃষ্ণা রানী সরকার। তার ৫ মিনিট পর দক্ষিণ কোরিয়া গোল শোধ দিলে অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচটির প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ সমতায়। তবে দ্বিতীয়ার্ধে পাত্তাই পায়নি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এই অর্ধে গুনে গুনে ৫ বার বাংলাদেশের জালে বল পাঠায় কোরিয়ানরা। ৬-১ গোলের বড় হার দেখে বাংলাদেশ।
বয়সভিত্তিক দলের র্যাঙ্কিং সেভাবে হিসাব করা হয় না। জাতীয় দল হিসেবে বাংলাদেশ নারী দলের ফিফা র্যাঙ্কিং ১০৪। যেখানে প্রায় নিয়মিত বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার র্যাঙ্কিং ২১। অসম শক্তির লড়াই হলেও প্রথমার্ধে একটুও ছাড় দেয়নি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দল।
ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে কোরিয়ার চেয়ে ভালো ফুটবলই খেলেছে বাংলাদেশ। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে কোরিয়া গোল খায় ম্যাচের ১৫ মিনিটেই। কোরিয়ার এক ডিফেন্ডারকে বিট করে শান্তি মার্ডি বল বাড়িয়ে দেন তৃষ্ণা রানী সরকারের কাছে। শুরুতে কোরিয়ার গোলরক্ষক চেষ্টা করলেও বল হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। গোল করতে ভুল করেননি সুযোগসন্ধানী তৃষ্ণা।
গোল খেয়ে সেটি শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০তম মিনিটে গোল শোধও দিয়ে দেয় তারা। কাউন্টার অ্যাটাকে গোল দেন লি হাউন। ২৪ মিনিটে কোচ পিটার বাটলার শান্তি মারডিকে তুলে নেন। তার বদলে বন্যাকে নামালেন। ৩০ মিনিচে যুথীকে তুলে নিয়ে পূজা দাসকে নামান। আক্রমণে শক্তি এই কৌশল বাটলারের। যদিও প্রথমার্ধে আর কোনো গোল দিতে পারেনি কোনো পক্ষ।
দ্বিতীয়ার্ধের ৪৮তম মিনিটেই এগিয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। লি হাউনের সহায়তায় এবার গোল আদায় করেন চো হাইওং। ৬০তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ায় কোরিয়ানরা। এবারও গোল দেন অধিনায়ক হাইওং। শেষদিকের কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ৩ গোল খায় বাংলাদেশ।
প্রতিপক্ষকে ফাউল করায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পেনাল্টির বাঁশি বাজলে ৮৭তম মিনিটে দুর্দান্ত এক শটে গোল আদায় করেন লি হাউন। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের শেষ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন কোরিয়ার ১০ নম্বর জার্সিধারী লি হাউন। আর কফিনের শেষ পেরেক ঠোকেন জিন হাইরিন।
টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচে লাওসকে ৩-১ গোলে ও দ্বিতীয় ম্যাচে তিমুর-লেস্তেকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেয় আফঈদা খন্দকারের দল। তবে তৃতীয় ম্যাচে এসে হার দেখতে হলো বাংলাদেশকে। আজ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে তো অবশ্যই ড্র করতে পারলেও প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব–২০ এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিতে পারত বাংলাদেশ। এশিয়ার ৩৩টি দল নিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব চলছে আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে। বাংলাদেশ আছে ‘এইচ’ গ্রুপে। আট গ্রুপের সেরা আট দলের সঙ্গে সেরা তিন গ্রুপ রানার্স আপ দলও পাবে আগামী বছর থাইল্যান্ডে মূল পর্বে খেলার সুযোগ। তবে বড় হারে সেই সুযোগ শঙ্কায় পড়ল পিটার বাটলারের শিষ্যদের। এখন অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই।