পবিত্র রমজান শুরু হতে আর মাত্র এক দিন বাকি। রোজায় যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে সেসবের দাম বাড়ছে হুহু করে। ইতোমধ্যে দাম বেড়েছে লেবু, বেগুন, শসা, বিভিন্ন ফল ও মাংসের। কয়েক মাস ধরে চলা ভোজ্য তেলের সংকট এখনো কাটেনি। দোকানে মিলছে না পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল। হঠাৎ ৫ লিটারের কোনো বোতল পাওয়া গেলেও ১-২ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল উধাও। গতকাল রাজধানীর খিলক্ষেত, জোয়ারসাহারা ও মহাখালী বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজারে দেখা যায়, রমজান উপলক্ষে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দোকানের সামনে রয়েছে ব্যাপক ভিড়। ক্রেতারা দরদাম করে পণ্য কিনছেন। একই রকমভাবে গরু ও মুরগির মাংসের দোকানের সামনেও দেখা গেছে ক্রেতার জটলা। বাজারে ১ হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকায়। ১০ দিন আগেও এর সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ৪০ টাকা। সে সময় ২০ টাকায়ও ১ হালি লেবু কেনা গেছে। এখন ৬০ টাকার নিচে মিলছে না।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ হালি এলাচি লেবু ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিলেটের শরবতি লেবুর ৮০ থেকে ১০০ টাকা। অন্যদিকে কাগজি লেবু ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রোজায় ইফতারির অন্যতম উপকরণ শসা। বাজারে এখন ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে শসা। যা আগে ছিল ৫০ টাকা। এদিকে বেগুনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। লম্বা বেগুন ৭০ আর গোল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা। বাজারে গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে সোনালি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ ও সোনালি হাইব্রিড ৩১০ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগি ৩০০, সাদা লেয়ার ২৯০, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২১০ ও দেশি মুরগি ৫৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৭৫০ টাকার গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা, ১১০০ টাকার খাসি মাংস ১২৫০-১৩০০ টাকা।
ভোজ্য তেল গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার বেশি আমদানি হয়েছে। তার পরও রোজার আগেই বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল। পরিস্থিতি এমন, পাঁচ বাজার ঘুরেও মিলছে না ১ লিটারের বোতল। পাড়ামহল্লার মুদি দোকানও খালি। এ ছাড়া ভোজ্য তেলের দোকানে তেল লুকিয়ে রেখে ক্রেতাকে তেল নেই বলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। পরে সে তেলগুলো বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ভোক্তার বাজার তদারকি কার্যক্রমে এমন চিত্র দেখা গেছে। ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ ফল। ইতোমধ্যে ফলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন ফলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। আপেল বর্তমানে ২৬০-৪০০ টাকা কেজি, মাল্টা ২৮০-৩২০ টাকা, পেয়ারা ৮০-১০০ টাকা, তরমুজ সাইজভেদে ৪৫০-৫৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে শিম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বড় আকারের ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাঁধাকপি বড় সাইজের ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পাকা টম্যাটো কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, মটরশুঁটি ৮০ থেকে ১০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।