এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার দায় নিজের ঘাড়ে তুলে নিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সময়মতো ড্রেন পরিষ্কার ও আরেকটু সতর্ক থাকলে নগরবাসীকে হয়তো এতো ভোগান্তিতে পড়তে হতো না বলে মনে করেন তিনি। আগামীতে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমাতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৮টি স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠন করা হয়েছে। ভারি বর্ষণ হলে মেয়রসহ সকল কাউন্সিলর মাঠে থাকারও ঘোষণা দিয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী। একই সাথে ছড়া-খাল ও ড্রেনে ময়লা আবর্জনা না ফেলতে নগরবাসীকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরভবনে জলাবদ্ধতা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি এমন কথা বলেছেন।
মেয়র আরিফ বলেন, ‘এবার একটু আগেভাগেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আমাদের ধারণা থেকে প্রায় দুই মাস আগেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ফলে প্রস্তুুতিটা সেভাবে নেয়া যায়নি। দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোডে যে জলাবদ্ধতা হয়েছে সেটা অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজের জন্য। ওই রোডে উন্নয়নকাজ চলাকালীন অবস্থায় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।’
ঈদ পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বন্যা পরবর্তী ড্রেন পরিষ্কারে মনযোগী হতে না পারায় নগরীতে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নেয় দাবি করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বন্যার পরপরই কোরবানির ঈদ চলে এলো। ফলে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আমাদের দুর্ভাগ্য, যদি পয়েন্টে পয়েন্টে বা আমাদের ড্রেনগুলোতে যে ময়লা জমেছিল, সেগুলো যদি আমরা পরিষ্কার করে ফেলতাম, তাহলে শহরের অনেক জায়গায় পানি ওঠতো না। আমরা আসলে এতো বেশি বৃষ্টি হবে, এটা চিন্তা করিনি।’
মেয়র বলেন, ‘এবারের বন্যায় দলদলি বাগানের টিলা ধসেছে। যার ফলে পলি এসে আমাদের ড্রেন ভরে গেছে। আমাদের যে ছড়া-খাল বা ড্রেনের গভীরতা ছিল, একটানা বর্ষা মৌসুমে আমরা এগুলোতে কাজ করতে পারিনি। কারণ, বন্যা ছিল, বৃষ্টি ছিল।’
জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়ে মেয়র আরিফ বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের একটু সচেতনতার অভাব আছে। বাড়িতে যতো আবর্জনা আছে, কাপড় থেকে শুরু করে লেপ-তোষক সবই ড্রেনে ছেড়ে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে ড্রেন বা ছড়ার যে নাব্যতা, সেটাও লোপ পায়। রাস্তায় ফেলে রাখা ময়লা আবর্জনায় ড্রেনের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। নাগরিক সমাজ আরেকটু সচেতন হলে এই ভোগান্তি অনেক কমানো সম্ভব হবে।’
জলাবদ্ধতা নিরসন ও ভোগান্তি কমাতে নগরভবনে ৮টি স্ট্রাইকিং টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। পানি নিষ্কাশন স্বাভাবিক রাখতে মাঠে থাকবেন মেয়র নিজে। সকল কাউন্সিলরও কাজ করবেন একযোগে। পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্যরাও সর্বশক্তি নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন নিশ্চিতের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবেন বলে জানান মেয়র আরিফ।