বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সাবেক সাংসদ এম. জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন আমরা এখন রাষ্ট্র মেড়ামত করব। আমাদের নেতা দেশ নায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্র মেড়ামতের ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন। দেশের ৩৯টি রাজনৈতিক দল তা সমর্থন করেছে। আমাদের বাড়ি ঘর মেড়ামত করতে গিয়ে ঘরের পুরানো টিন, পুরানো কাঠ, পুরানো লোহা ফেলে দিতে হয়, ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে হয়। ঠিক তেমনি ভাবে রাষ্ট্র মেড়ামত করতে হলে রাষ্ট্রের ময়লা আজর্বনাকেও ফেলে দিতে হয়। আমাদের রাষ্ট্র মেড়ামত করতে গিয়ে এ দেশের ছাত্র-জনতা প্রথমেই যে কাজটি করেছে তারা এ রাষ্ট্রের আবর্জনা ফেলে দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। কেননা এই রাষ্ট্র মেড়ামত করতে গেলে প্রথমেই শেখ হাসিনার মত আবর্জনা ফেলে দিতে হয়।
স্থানীয় বিএনপির গুরুত্বপূর্ন নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ও শুক্রবার বিকেলে বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে সংখিপ্ত সভাগুলোতে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
পূজা মন্ডপগুলোতে বক্তৃতাকালে তিনি আরো বলেন, ওই আবর্জনার যে সমস্ত ধংসাবশেষ এই পর্যায়ে আছে, সে গুলোকেও আমাদেরকে ফেলে দিতে হবে। তারপর দেশে একটা নিরপেক্ষ প্রশাসন আসবে। দেশে একটা নিরপেক্ষে নির্বাচন হবে, এবং জনগন তার ক্ষমতা চর্চা করবে। তারা যাদেরকে নির্বাচিত করবে তারা দেশ চালাবে। মাঝখানের এই সময়টুকুতে আমাদের সকলকে খুব সতর্ক থাকতে হবে, খুব সাবধান থাকতে হবে। আমাদের দলের নেতা মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের নেতৃত্বে আমরা যখন প্রধান উপদেষ্ঠার সাথে কথা বলেছি তখন তাকেও আমরা বলেছি যে, আমরা সকল সহযোগীতা করব। আমরা চাই প্রশাসন এই ক্ষমতার চর্চা করুক।
রাষ্ট্রে পুলিশের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, পুলিশের সম্মান, মর্যাদা, ক্ষমতা যত বাড়বে এবং তারা ন্যায্যভাবে এই ক্ষমতাকে যতবেশী কাজে লাগাবে, ততবেশী আমরা একটি সামাজিক শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে পারব। দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে যতক্ষন পর্যন্ত আমরা মর্যাদাবান ও শক্তিশালী করতে না পারবো ততক্ষন পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রকৃত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা যাবে না। প্রধান উপদেষ্ঠা নিজেও তা স্বীকার করেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও তা স্বীকার করেছেন এবং আমরা আশা করব প্রধান উপদেষ্ঠা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সহযোগীতা করা, আমরা সহযোগীতা করব, সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। এরই মধ্যেই এসে গেছে পূজা। আর পূজা মানেই হচ্ছে যড়যন্ত্রকারীদের জন্য একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চক্রান্ত। আপনাদের নিশ্চই মনে আছে ২০০১ সালে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রাতেই একটি দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর আমি যখনই দেশের বাইরে গেছি, নিউ ইয়র্কে গেছি, জাতিসংঘে গেছি, ভারতে গেছি সেখানেই এ নিয়ে আমাকে কথা বলতে হয়েছে। পুরো ঘটনাটাই ছিল একটি নাটক। এবারে যেন সেই নাটক করতে না পাবে সে জন্য আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
মন্ডপ ভক্ত, পুজারী ও স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রের মালিক জনগন এবং সেই মালিকানা যখন জনগন চর্চা করবে তখন নিশ্চই তারা হিন্দু- মুসলমানের দাঙ্গা চাইবে না। তারা চাইবে হিন্দু-মুললমানের সম্প্রীতির পরিবেশ। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে এই পরিবেশ নষ্ট করেছে। তারা আমাকে এলাকায় আসতে দেয় নাই। আমার সহকর্মীদেরকেও গত ১৫ বছরে এলাকায় আসতে দেয় নাই। এমনকি আমাকে আমার বাবা-মা’র কবর জেয়ারত পর্যন্ত করতে দেয় নাই। শুধুমাত্র আপনারা আমাকে ভাল বাসেন সেই ভয়ে। এখন তারা নিজেরাই পালিয়ে গেছে। স্থানীয় ছোট খাট চেলা চামুন্ডাদের কথাতো আর বলে লাভ নাই, তাদের শিখন্ডি কথিত ফেসীবাদের প্রধান কর্তৃত্ব শেখ হাসিনা। এত অসম্মান-অপমান নিয়ে পৃথিবীর কোন সরকার বিদায় নেয় নাই।
সভাগুলোতে তার সাথে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের জেলা পুলিশ সুপার মোঃ বেলায়েত হোসেন, বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ মিজানুর রহমান খান মুকুল, গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইউনুস মিয়া, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব, সদস্য সচিব শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান। বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম কাজল, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মোঃ শামীম খলিফা, গৌরনদী পৌর বিএনপির আহবায়ক মোঃ জাকির হোসেন শরীফ, সদস্য সচিব মোঃ ফরিদ মিয়া, বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ সাইয়েদুল আলম সেন্টু খান, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ কামরুজ্জামান খোকন, যুগ্ন আহবায়ক জাকির হোসেন রাজা, শ্রমিক দল নেতা আবু সাঈদুর রহমান সাঈদ, পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক বুলবুল সরদার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ জাফর ইকবাল প্রমুখ।