গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোমা পুঁতে হত্যাচেষ্টার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শেখ মো. এনামুল হক ওরফে শেখ এনামুল করিমকে (৫৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে ‘কারি’ সেজে গাজীপুরের একটি মসজিদে ৮ বছরের বেশি সময় ইমামতি করেন।
আজ রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, গাজীপুরে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন এনামুল। পরে ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ভুয়া হারবাল চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গতকাল শনিবার রাতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর একটি দল রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় জনসভার অদূরে জঙ্গি শেখ মো. এনামুল করিমসহ তার অপরাপর জঙ্গি সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় কোটালীপাড়া থানায় হত্যাচেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩টি মামলা হয়।
তদন্ত শেষে ওই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ অভিযুক্ত এনামুল হকসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও তৎকালীন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির আমির মুফতি আব্দুল হান্নানের সঙ্গে এনামুলের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
এনামুল উত্তরায় ২০১৫ সালে ‘আই কে হোমিও কলেজ উত্তরা’ নামে একটি ভুয়া হোমিও প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। পরে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে তিনি ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্র নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুলে ভুয়া হারবাল চিকিৎসা দেওয়া শুরু করে। তার চিকিৎসায় ক্যানসার সম্পূর্ণরূপে ভালো হয় বলে তিনি দাবি করতেন। এছাড়া তিনি এইডস রোগ নিরাময়ে চিকিৎসা দিতে সক্ষম বলে দাবি করতেন।