মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায়। রোহিঙ্গাদের কোনোমতেই জোর করে মিয়ানমারে পাঠানো যাবে না। কারণ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। ওখানে এখনো সামরিক দাঙ্গা চলছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের পছন্দ মতো গ্রামে বসতি স্থাপন করতে দিচ্ছে না। সেখানে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে মানবিক সহায়তা পাঠানোর অনুমোদন দিচ্ছে না। তাই আমি মনে করি না এটা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত সময়।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানও চায়। বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধান এবং স্বল্প মেয়াদে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে বিকেলে কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতারের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির পরিদর্শনে আসেন।
দিনব্যাপী রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে বিকেলে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে তিনি আরআরআরসি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করেন।
তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সঙ্কটে সবচেয়ে বড় দাতা দেশ। রোহিঙ্গা সঙ্কটে ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ২২০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে।
ব্রিফিংয়ে তিনি বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বানিজ্য এবং বিনিয়োগে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের অংশীদার। অবাধ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বলে আসছে বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হবে।
আফরিন আকতার তার দিনব্যাপী শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন এবং জাতিসঙ্ঘ পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন ছাড়াও তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময় করবেন। তিনি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সহকারী মন্ত্রীর নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দল উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর ক্যাম্পের রেজিষ্ট্রেশন সেন্টারে পৌঁছে রোহিঙ্গাদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম দেখেন।
পরে মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত রোহিঙ্গা ওমেন সেন্টার, লার্নিং সেন্টার রোহিঙ্গাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টার জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন।
মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী দুপুরে ১১ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময় করেন।
বিকেলে কক্সবাজারে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে বাংলাদেশ সরকারের শরনার্থী বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।