বরগুনার বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পেীরসভার নতুন কমিটি গোছাতে ব্যস্ত উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারা। কমিটি গঠনে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে শুরু হয়েছে সম্মেলন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর বেতাগী সদর ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বেতাগী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আমিরুল ইসলাম পিন্টু। বেতাগীতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে পদ পেতে ৭২ লাখ টাকার পদ বাণিজ্য হয়েছে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তার সে বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলে সঠিক নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায় সম্মেলন করা হয়।নেতা তৈরি করা হয়। কিন্তু এই সুযোগে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ৭২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’
এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপির আমলনামা নিয়ে সমালোচনা করে এসেছি। আজ কেন আওয়ামী লীগ টাকার কাছে বিক্রি হবে? কেন বিএনপির কালচার আমাদের মধ্যে আসবে।’
এসময় মঞ্চে উপস্থিত থাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র এ বি এম গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানসহ পৌর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের উদ্দেশে আমিরুল ইসলাম পিন্টু বলেন, ‘অতি দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুণ।তা না হলে এমন চলতে থাকলে আগামীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।আমাদের রাজনীতি পিছিয়ে পড়বে এবং একদিন বিএনপির থেকেও দুর্দিন হবে আমাদের ‘
তিনি বলেন, ‘কিছু লোকের স্বার্থ উদ্ধারে স্বাধীনতাবিরোধী লোকদের দলে এনে সব ঘোলাটে করা হয়েছে। নেতাদের বাসায় টাকার খাম আর বড় বড় উপহার আসতেছে এসব বন্ধ করান। আপনাদের মাধ্যমে আমি বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমনসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই- যেন এই ৭২ লাখ টাকা বাণিজ্যের একটা সুষ্ঠু বিচার হয়।’
ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম পিন্টু বলেন, ‘ওয়ার্ডের রাজনীতি করে নেতা কী আর পায়? চেহার ছাড়া কিছুই না। সেখানে যদি চেহার পেতেই লাখ টাকা গুণতে হয়।’
পিন্টু বলেন, ‘আমার বক্তব্যে আমি যা বলার বলে দিয়েছি, আমি প্রমাণ ছাড়া কথা বলি না। এখন যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। আমি প্রমাণ দিয়ে সহায়তা করব।’
পদ বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম গোলাম কবির বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। সম্মেলনের মাঝে আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম পিন্টু কেন এমন বক্তব্য রাখল এ ব্যাপারে আগে জানব, প্রয়োজনে জেলা আওয়ামী লীগ ও ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। তবে এমন বক্তব্য শোনার জন্য মোটেও আমি প্রস্তত ছিলাম না। শোনার পর থেকে আমি খুব ব্যথিত ও লজ্জিত।’