রাজধানীর আজিমপুরের ১৮তলা কনকর্ড ভবনটি এতিমদের স্বার্থে ব্যবহারের উদ্দেশ্য স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসকের উপস্থতিতে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর কনকর্ডের সাথে এতিমখানা কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলে আসছিল ওই ভবনের মালিকানা নিয়ে। এর আগে এতিমখানা কর্তৃপক্ষ ভবনের মালিকানার বিষয়ে আদালতের রায় পায়।
ভবনটি হস্তান্তরের সময় ঢাকা জেলা প্রশাসক মো: শহীদুল ইসলাম বলেন, এই জায়গাটি দেয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এটি এতিমদের স্বার্থে ব্যবহৃত হবে। যে কারণে আজ আমরা এতিমখানার প্রশাসকের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করলাম। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, রায়ের পর আমরা ৩০ দিন অপেক্ষা করেছি। এর পরও কনকর্ড ভবনটি আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম। আজ জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ভবনটি আমাদের বুঝিয়ে দেয়া হলো। এর আগে রায় বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত সময় ৩০ দিনের মধ্যে কনকর্ডকে এতিমখানা ভবনটি বুঝিয়ে দিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর এতিমখানার পক্ষে আবেদন করা হয়। গত ৪ আগস্ট এ আবেদন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: শহীদুল ইসলাম সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার পক্ষে বর্তমান প্রশাসক ও সমাজসেবার অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ভবনটি হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরের সময় জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), এতিমখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৯ জুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ কনকর্ড গ্রুপের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। আদেশে আদালত বলেন, আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
এতিমখানা সূত্রে জানা গেছে, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার কার্যনির্বাহী কমিটি ২০০৪ সালে এতিমখানার ৮.৫ বিঘা সম্পত্তি কনকর্ড কনডোমিনিয়াম লিমিটেডের (ডেভেলপার) সাথে যৌথ উন্নয়নের নামে অসম ও বেআইনি চুক্তি করেন। ওই জমির মধ্যে দুই বিঘা (৪০) কাঠা জমির ওপর ডেভেলপার কোম্পানি ২০১২ সালে একটি ১৮ তলা আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে, যার অনুপাতে এতিমখানা পাবে ১২ শতাংশ, ডেভেলপার ৮৮ শতাংশ এবং সাইনিং মানি বাবদ এতিমখানাকে দেয়া হয় ৩০ লাখ টাকা। অভিযোগে বলা হয়, কমিটির সদস্যরা যোগসাজশের মাধ্যমে, আজীবন সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ও লিজের শর্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, এতিমখানার গঠনতন্ত্রের বিধিভঙ্গ করে, নিজেদের লাভের উদ্দেশ্যে এতিমখানার জমি বিক্রি করেছেন। এসব কর্মকাণ্ডে দায়ভার ২০০৩ সালের কার্যনির্বাহী কমিটি ওপর বর্তায় কারণ কার্যনির্বাহী কমিটিকে এতিমখানার গঠনতন্ত্র লিজ করা সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করার কোনো ক্ষমতা দেয়নি।