বৃহস্পতিবার, ১২:২০ অপরাহ্ন, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

৬ বছরে দুবাই থেকে এসেছে ৯০ কোটি টাকার স্বর্ণ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৭২ বার পঠিত

আট বছর আগের কথা। চরম অর্থকষ্টে দিন কাটত জুয়েলের। ধারদেনা করে ২০১৭ সালে যান দুবাই। সেখানকার শপিং সেন্টার দুবাই মলে সেলসম্যানের চাকরি পান। একপর্যায়ে পরিচয় হয় স্বর্ণচোরাকারবারি কবিরের সঙ্গে। তার হাত ধরে জড়িয়ে পড়েন আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রে। এর মধ্যে দুবাইয়ের রেসিডেন্সিয়াল কার্ডও পান। গত ৬ বছরে ৭০ বার তিনি বাংলাদেশে আসেন। প্রতিবারই অভিনব কৌশলে কয়েক কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে আসেন। বিনিময়ে কমিশন বাবদ চালানপ্রতি জুয়েলকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা করে দিতেন কবির। এভাবে গত ৬ বছরে তিন মণেরও বেশি স্বর্ণ দেশে নিয়ে আসেন জুয়েল, আর্থিক মূল্যে যা প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এভাবে বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক বনে যান জুয়েল। এ পর্যন্ত সবকিছুই চলছিল ঠিকঠাক। কিন্তু গত রবিবার এ গল্পের যবনিকাপাত ঘটেছে।

সেদিন সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেসরকারি কোম্পানি হেল্পলাইন সার্ভিসের কর্মী আমজাদ হোসেনের কাছে দুই কোটি টাকার স্বর্ণবার হস্তান্তর করতে গিয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) হাতে ধরা পড়ে যান জুয়েল। হেল্পলাইন সার্ভিসের কর্মী আমজাদ হোসেন অবস্থা বেগতিক দেখে পালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তাদের দুজনের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ১ কেজি ৯৫৫ গ্রাম ওজনের ১৬টি স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করেছে এপিবিএন। আদালতের নির্দেশে গতকাল জুয়েল ও আমজাদকে দুদিনের রিমান্ডে পেয়েছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। আর রিমান্ডেই বেরিয়ে আসছে স্বর্ণচোরাকারবারি চক্রের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, স্বর্ণচোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য জুয়েলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। তিনি গত ৬ বছরে দুবাইয়ে ৭০ বার যাতায়াত করেছেন। দুবাই থেকে আসা এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে

গত রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন জুয়েল। আগে থেকে যোগাযোগ করে রাখা আমজাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাকে একটি কালো রঙের পাওয়ার ব্যাংক এবং টেপে মোড়ানো চারটি স্বর্ণবার দেন জুয়েল। এরপর গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার পর তাদের আটক করে এপিবিএন। এ সময় আমজাদের কাছে থাকা পাওয়ার ব্যাংকের ভেতরে লুকিয়ে রাখা ১০টি ও প্যান্টের পকেটে ৪টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। আর জুয়েলের কাছ থেকে আরও দুটি স্বর্ণবার ও অলঙ্কার জব্দ করা হয়। এসব স্বর্ণ দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জুয়েলকে দিয়েছেন কবির।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চোরাচালানে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জুয়েল জানান, এর আগেও তারা একই পদ্ধতিতে স্বর্ণ চোরাচালান করেছেন। দুবাইয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশি কবির তাকে এসব স্বর্ণ দেন বাংলাদেশে পাচারের জন্য। ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারলে মোটা অঙ্কের কমিশন পান জুয়েল। আমজাদও একটি কমিশন পান এ চক্রের কাছ থেকে। এক সপ্তাহ আগেও একটি চোরাচালানে সহযোগিতা করায় আমজাদ ২০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন জুয়েলের কাছ থেকে। এ চক্রে আরও ৮ জনের নাম পেয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক আমাদের সময়কে বলেন, জুয়েল ও আমজাদ জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে। আর কারা এ চক্রে জড়িত, তা তদন্তের পর বলা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com