১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জম্মগ্রহন করেন তিনি।
সার্বজনীন এই কবি বাংলাভাষা সাহিত্যকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব দরবারে। তাইতো নাগরিক মধ্যবিত্ত মননে আজও বাজে কবির অনিন্দ্যসুন্দর সব গান। আনন্দ, বেদনা, কিংবা বিরহ, ভালোবাসা প্রতিটি প্রকাশেই বাংলা ভাষাভাষির প্রাণের আশ্রয় রবীন্দ্রনাথ।
নিজের সময়ে থেকেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধারণ করেছিলেন অনাগত কালকে। তাইতো সব সৃষ্টি কর্মই এখনো সমান আবেদন নিয়ে মুগ্ধ করছে শ্রোতাদের। মধ্যযুগীয় উপনেবেশিক সাহিত্যের বেড়াজাল থেকে বাংলাসাহিত্যকে আধুনিকতায় মুক্তি দিয়েছিলেন কবিগুরু।
জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা দেবী দম্পতির কোলজুড়ে এসেছিলেন ১৮৬১ সালে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে প্রতিভার প্রকাশ ঘটে, কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ কবি কাহিনীতে। উচ্চশিক্ষার জন্য বিলেত গেলেও গতানুগতিক প্রাতিষ্ঠানিক গন্ডীর বাইরে অনন্য এক উচ্চতা ছুঁতে চেয়েছিলেন রবি ঠাকুর।
সকল ক্ষেত্রেই স্পষ্ট উচ্চারণ বারবার ধ্বনিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের অসংখ্য সৃষ্টি কর্মে। সত্য, সুন্দর আর প্রেমের সাধনা হয়ে ওঠে তার সমগ্র কাব্য সাহিত্যের প্রয়াস। আধুনিকতা আর উৎকর্ষকতায় মানুষ অনেক বেশি যান্ত্রিক হলেও আবেগ অনুভূতি প্রকাশে এখনো ফিরে আসতেই হয় রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি সম্ভারে।
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্যগন্থের জন্য প্রথম বাঙালি হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পান রবীন্দ্রনাথ। তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার রবীন্দ্রনাথ ইংরেজদের অত্যাচার এবং নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ত্যাগ করেন ব্রিটিশ সরকারের দেয়া নাইট উপাধি।
লেখনি দিয়ে বৃটিশ উপনিবেশিক শাসনে জর্জরিত উপমহাদেশের মানুষের মনে জুগিয়েছেন শক্তি ও সাহস। সমগ্র জীবনে অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ, গান, নাটক আর উপন্যাস রচনা করেন। জীবন সায়াহ্নে, সত্তর বছর বয়সে শুরু করেন ছবি আঁকা। দুই হাজারের মতো ছবিও এঁকেছেন তিনি।
১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট, বাংলা ২২শে শ্রাবণ ৮০ বছর বয়সে চির বিদায় নেন কবি গুরু। তবে কাব্য ও গানে আজও বেঁচে আছেন বাঙালির অপরিহার্য রবীন্দ্রনাথ।
জাতীয় পর্যায়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে।