বলিউডের অন্যতম কৃতী ও নামজাদা অভিনেতা তিনি। শুধু সিনেমাতেই নয়, চুটিয়ে অভিনয় করেছেন থিয়েটারেও। কৃতী অভিনেতার পাশাপাশি স্পষ্টবক্তাও তিনি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কোনো দিন পিছপা হননি তিনি। এবারও ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অভিনেতার গলায় শোনা গেল আক্ষেপের সুর। নাসিরের দাবি, ভারতের নাগরিকদের মনে সুকৌশলে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই মুসলিম-বিদ্বেষটাই এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘আজকালকার সিনেমায় বা সিরিজ়ে যা দেখানো হচ্ছে, তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাস্তবে। সেটা আদপে ইসলামফোবিয়া।’
নিজের মন্তব্যের মধ্যে কোনো ধোঁয়াশা না রেখেই নাসির বলেন, ‘বর্তমান এ সময়টা বেশ উদ্বেগজনক। নানা অছিলায় কিছু মুসলিম-বিরোধী ভাবনাচিন্তা ও ধ্যান-ধারণা আমাদের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। সামাজিক জীবনেও তারই প্রতিফলন ঘটছে প্রতিনিয়ত। মুসলিম-বিদ্বেষ তো আজকাল একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়ে গেছে! এমনকি, শিক্ষিত মানুষদের মননেও কোথাও একটা এটা ঢুকে গেছে।’
অভিনেতার কথায়, ‘ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল সুকৌশলে এটা দেশের সাধারণ মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, গণতন্ত্রের কথা বলি, তা হলে সব কিছুর মধ্যে ধর্মের পরিচয় দেয়া হচ্ছে কেন? যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে ভোট পাচ্ছেন, তাদের সামনে তো নির্বাচন কমিশন স্রেফ নীরব দর্শক!’
নাসিরের প্রশ্ন, ‘’এই কাজই যদি আজ কোনো মুসলিম নেতা করতেন, তিনি যদি ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইতেন, তা হলে তো এত দিনে দুনিয়া এ দিক থেকে ও দিক হয়ে যেত!’’
জনপ্রতিনিধিদের ধর্মের দোহাই দিয়ে ভোট পাওয়া নিয়ে সরব অভিনেতা। তার প্রশ্ন, ‘নির্বাচন কমিশন কতটা মেরুদণ্ডহীন হলে দিনের পর দিন এটা চলতে পারে! নির্বাচন কমিশনের তো একটা কথা বলারও সাহস নেই।’
পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি তিনি। নাসিরের কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেও তো ধর্মের নামে ভোট চান, যদিও তার পরও সাম্প্রতিক নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন তিনি।’
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী নাসিরউদ্দিন শাহ। তারা আশা, ‘এক দিন নিশ্চয়ই এই ঘৃণার রাজনীতি বন্ধ হবে।’