গরমের কারণে সবার জীবন অতিষ্ঠ। নানা রকম রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই। অনেকেই গরম থেকে স্বস্তি পেতে এসির উপর ভরসা করছেন। তবে এমন গরমে শুধু এসির উপর ভরসা না করে এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। নইলে বার বার অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয় থেকেই যায়। ভ্যাপসা গরমে কি ধরনের অসুস্থতা হতে পারে
১। ঘাম ও চড়া রোদের কারণে র্যাশ বেরোতে পারে চামড়ায়।
২। হিট সিনকোপ নামের সমস্যায় রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।
৩।এমন গরমে অতিরিক্ত কাজ, খেলা বা ব্যায়াম করলে পেশিতে তীব্র ব্যথা হতে পারে। একে বলে হিট ক্র্যাম্প।
৪।রান্নাবান্না সেরেই এসি চালিয়ে বিশ্রাম নিলে, বাইরে থেকে এসে ঘাম না শুকিয়ে ঠাণ্ডা পানি খেলে বা ঠাণ্ডা ঘরে বসে পড়ার মতো অনিয়ম করলে জ্বর, সর্দি ও কাশি এড়ানো খুবই কঠিন।
৫। তীব্র রোদের দিন হিট এক্সারসানে খুব বেশি ঘাম হয়। রোগী ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়েন। দ্রুত শ্বাস পড়ে। তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা না নিলে এখান থেকে হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
৬। হিট স্ট্রোকে তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হঠাৎ শরীরের তাপ বেড়ে যেতে পারে। তা ১০৫ ডিগ্রির উপরও হতে পারে। এটা কিন্তু জ্বর নয়। এর সাথে ঘাম হয় না বলে শরীরের তাপ বেরোতে পারে না। এর ফলে বিপদ বাড়ে।
৭। সারাদিন ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যার দিকে ঝড়বৃষ্টি এলে হঠাৎ ৭–৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে যায়। অ্যাজমা রোগীদের এই সময় যত্নে রাখুন। তাপমাত্রার ওঠানামায় এদের অ্যাটাক হতে পারে। এসব বিপদ ঠেকাতে যা করবেন
৮। রোদে বের হলে ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ও হালকা সুতির পোশাক পরুন।
৯। পেশিতে ব্যথা হলে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় গিয়ে ব্যথা না কমা পর্যন্ত বিশ্রাম নিন। ও্যর স্যালাইন খেতে পারেন।
১০। রোদে বা গরমের মধ্যে অনেকক্ষণ টানা কাজ করবেন না। কাজের ফাঁকে ঠাণ্ডা জায়গায় বসে বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে ফিরুন।
১১।প্রসাব হলুদ হলে বা প্রসাবের পরিমাণ কমে গেলে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান। পানি খাওয়ায় বিধি-নিষেধ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
১২। হাঁপানি রোগীরা অবস্থা বুঝে এই সময় ইনহেলারের একটা পাফ নিন। বা যদি মনে হয় কষ্ট শুরু হতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের ডোজ বাড়াতে পারেন।
১৩। ডিহাইড্রেশন এড়াতে কফি ও কোমল পানীয় কোমল পানীয় খাওয়া কমান। হালকা খাবার খান, পেট একটু খালি রাখুন। বেশি খেয়ে রোদে বেরুবেন না আবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়েও পড়বেন না।
১৪। চড়া রোদ এড়ানো সম্ভব না হলে বেরুনোর আগে এক গ্লাস পানি খান। প্রেসার-সুগার না থাকলে লবণ-চিনির পানি বা ও্যর স্যালাইন খেতে পারেন। ডাবের পানি, টাটকা ফলের রস বা ঘোলও খেতে পারেন।
১৫। হিট এক্সারশন হলে গরম থেকে সরে গিয়ে বিশ্রাম নিন। কষ্ট না কমা পর্যন্ত স্যালাইন পানি বা ডাবের পানিও খেতে পারেন। কষ্ট কমতে শুরু করার পর হাত-মুখ ধুয়ে ফ্যান বা এসি চালিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন
লেখক : এমপিএইচ (জনস্বাস্থ্য)
ভাইস চেয়ারম্যান
নূর ই সামাদ নার্সিং কলেজ
(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি বেসরকারি নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয়) ঢাকা
(নয়াদিগন্ত থেকে নেয়া )