সরকারের পদত্যাগসহ এক দফা দাবিতে চলমান রোডমার্চ আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রাক প্রস্তুতি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আজ শনিবার বরিশালের বেলস পার্কে রোডমার্চপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা জানান।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল বেলস পার্ক থেকে এই রোডমার্চ শুরু হয়। রোডমার্চটি ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুরে গিয়ে শেষ হবে।
রোডমার্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। তাদের সঙ্গে রয়েছেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, সাবেক বিমানবাহিনীর প্রধান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সাবেক এমপি হারুন অর রশিদ সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় নেতা আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল হক নান্নু, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, আবুল হোসেন, নাজিমুদ্দিন আলম, রফিকুল ইসলাম জামাল, এবাদুল হক চান, আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
বরিশাল বিভাগে সাংগঠনিক জেলা বরিশাল উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং মহানগর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর জেলা থেকে রোডমার্চে বিপুল সংখ্যক বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে অংশ নেন নেতাকর্মীরা। রোডমার্চ শুরুর পর ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুরের দিকে এগিয়ে যায়। পথে ঝালকাঠিতে একটি পথসভা করার কথা রয়েছে।
এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে সিলেট অভিমুখে রোডমার্চ করে বিএনপি। বরিশালের এই রোডমার্চ দ্বিতীয়। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগে, ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ, ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চ, ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চ করবে বিএনপি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই রোডমার্চ আগামী দিনে আরও বৃহত্তর কোনো আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবে হচ্ছে। মনে রাখবেন কোনো আন্দোলন বৃথা যায় না। আজকের এই রোডমার্চ আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতি করে আজকে কিছু কিছু মানুষ বড়লোক হয়েছে, কোটিপতি হয়েছে, শত শত কোটিপতি হয়েছে আর সাধারণ মানুষ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ একটা শিশু জন্মগ্রহণ করে এক লাখ টাকার মতো ঋণ মাথায় নিয়ে।
এ সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রসঙ্গ টেনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি, মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ হালাল পথে ইনকাম করে জীবন নির্বাহ করতে পারে না।
তিনি বলেন,‘অনচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-যা বদল করে করা হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়। নারী-শিশু-সাংবাদিক পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। এই অবস্থা থেকে দেশ ও দেশের জনগণকে মুক্ত এবং দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশকে মুক্ত করতে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের নেতা তারেক রহমানের পরামর্শে আমরা বিএনপি ও বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এক দফা দাবিতে আজ আন্দোলনরত আছি। আমরা এই সরকারের পতন চাই। যে সরকার ও সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় নাই, সেই সংসদ বাতিল করতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকার গঠন চান উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেই দাবিতে সারাদেশের মানুষ রোডমার্চ করছে, সভা করছে, মিছিল করছে।’
বরিশালের রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধন করতে গিয়ে নেতাকর্মীরে উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে এই রোডমার্চ সফল করবেন।
রোডমার্চ পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বরিশাল মহানগর বিএনপি সভাপতি মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে বেলস পার্কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ার, হারুনুর রশিদ, বিলকিস জাহান শিরিন, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। রোডমার্চ শেষে পিরোজপুর শেয়ালকাঁটা ময়দানে সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।