আর্থকোয়াক বা ভূমিকম্প বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অন্যতম একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে আবহাওয়া অধিদফতর বা ভূতত্ত্ববিদ ব্যতীত ভূমিকম্পের তথ্য, সংঘটনের স্থান সম্পর্কে সাধারণ মানুষ খুব একটা তথ্য জানতে পারে না।
এ অবস্থায় ভূমিকম্পের তথ্য সাধারণ মানুষের সহজলভ্য করতে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আর্থকোয়াক অ্যালার্ট সিস্টেম চালু করেছে গুগল।
অ্যান্ড্রয়েড আর্থকোয়াক অ্যালার্ট সিস্টেম ফিচারটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে। ফিচারটি বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প শনাক্তে ও মানুষকে এ বিষয়ে সতর্ক করতে সহায়তা করবে। অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলোর মাধ্যমে ভূকম্পনসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় শনাক্ত করতে সিস্টেমটি এক্সিলারোমিটার ব্যবহার করে। ফিচারটি সার্চের মাধ্যমে ও সরাসরি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ডিভাইস থেকে তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করে।
ভূমিকম্প সতর্কতা ব্যবস্থা ব্যবহারকারীদের গুগল সার্চের মাধ্যমে নিকটবর্তী স্থানের ভূমিকম্প সম্পর্কিত তাৎক্ষণিক তথ্য দেবে। গুগলে ‘আর্থকোয়াক’ অথবা আর্থকোয়াক ‘নিয়ার মি’ লিখে সার্চ করলে ভূমিকম্পসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সামনে চলে আসবে। একইসাথে ভূমিকম্পের পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কেও এ ফিচার থেকে মানুষ বিভিন্ন তথ্য পাবে। তবে যারা এ ধরনের তথ্য পেতে চান না তারা ডিভাইস সেটিংস থেকে সতর্কবার্তা পাওয়ার বিষয়টি বন্ধ রাখতে পারবেন।
মোবাইল ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড আর্থকোয়াক অ্যালার্ট সিস্টেম দুটি ভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা দেখায়। তবে এটি ভূমিকম্পের ভয়াবহতা ও তীব্রতার ওপর নির্ভর করে।
প্রথমটি হচ্ছে বি অ্যাওয়ার। ৪.৫ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প বা মডিফাইড মার্সিলি ইনটেনসিটি (এমএমআই) স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৩ কিংবা ৪ হলে ‘বি অ্যাওয়ার’ ফিচারটি মানুষকে সতর্ক করে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্বসহ ব্যবহারকারীর কাছে নোটিফিকেশন পাঠানো হয়।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে টেক অ্যাকশন। ৪.৫ মাত্রারও বেশি ভয়াবহ ভূমিকম্প কিংবা এমএমআই স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা পাঁচের বেশি হলে ‘টেক অ্যাকশন’ ফিচারটি ভূমিকম্পের ফুলস্ক্রিন সতর্কবার্তা প্রদান করবে। সম্ভাব্য ভয়াবহ ঝাঁকুনিতে মানুষকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়তা করতে ডিভাইসে ফুলস্ক্রিন নির্দেশনা ভেসে উঠবে এবং ফোনটি উচ্চমাত্রার সংকেত দেবে।
অ্যান্ড্রয়েড আর্থকোয়াক অ্যালার্ট সিস্টেম ফিচারটি নিউজিল্যান্ড ও গ্রিসে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়। ২০২০ সালের আগস্টে ফিচারটি চালু হওয়ার পর হাজারো মানুষ ফিচারটির সুবিধা উপভোগ করেছে। বিশেষ করে ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার আগে মানুষকে তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে নিরাপদ ও সুরক্ষিত স্থানে যেতে ফিচারটির আগাম সতর্কবার্তা বেশ সহায়ক ভূমিকা রাখে।
অ্যান্ড্রয়েড আর্থকোয়াক অ্যালার্ট সিস্টেম ভূমিকম্প শনাক্ত করতে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে সেন্সর দিয়ে থাকে এবং যেখানে ঘটনাটি ঘটে তার কোরস লোকেশনসহ শনাক্তকরণ সার্ভারে সংকেত পাঠায়। অনেক ফোন থেকে প্রাপ্ত তথ্য ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা এবং এর ভয়াবহতার মাত্রা নিশ্চিত করতে সার্ভারে প্রক্রিয়া করা হয়।
ব্যবহারকারীর ডিভাইসে সতর্কবার্তাটি চালু আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হলে স্মার্টফোনের সেটিংস থেকে লোকেশনে প্রবেশ করতে হবে। এর অ্যাডভান্স অপশনে গিয়ে আর্থকোয়াক অ্যালার্ট চালু করতে হবে।