উদ্বেগ একটি আবেগ যা শরীরের অভ্যন্তরীণ অশান্তির বহিঃপ্রকাশ।সাধারণত কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার মাধ্যমে এর প্রকাশ ঘটে। ভীষণ দুশ্চিন্তা, নেতিবাচক চিন্তা থেকে এ রকম হয়। এতে আচরণ ও শরীরের মধ্যে পরিবর্তন আসে।
৬টি কৌশল অবলম্বন করে উদ্বেগ থেকে মুক্তি লাভ করা যাবে এবং নিজেকে শান্ত রাখা যাবে।
প্রথমত হাঁটা, নাচ, রক ক্লাইম্বিং বা যোগব্যায়াম করার রুটিন বা কার্যকলাপে লেগে থাকার চেষ্টা করতে হবে যা মানসিক চাপ, এবং উদ্বেগ দূর করতে সাহায্য করবে। নিয়মিত ব্যায়াম স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমায় এবং এন্ডোরফিন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা মন মেজাজ ভালো রাখে এবং প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত ব্যায়াম আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ও কাজ করে। যা ফলস্বরূপ মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়।
শরীরচর্চার পর কিছু সময় রোদে পোহানো শরীরকে ভালো করতে পারে এবং সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে পারে। সেরোটোনিন এমন এক হরমোন যা মনকে শান্ত এবং অধিক মনযোগী করতে পারে।প্রতিদিন কিছু সময় রোদ পোহানো কেবল মানসিকভাবে ভাল রাখে তা নয়, এটি শারীরিক ভাবেও সুস্থ রাখে। যেমন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন, পেশীর টান এবং স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ কমাতে অবদান রাখে।
উদ্বেগ কমাতে ধ্যান (মেডিটেশ) এর চর্চা করা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে।বলা হয়ে থাকে মাত্র ৩০ মিনিটের ধ্যান (মেডিটেশন) মানসিক চাপ প্রশমনে ওষুধ সেবনের চেয়েও বেশি উপকারী। নিয়মিত ধ্যান মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অস্থিরতা প্রশমনে ও ভালো ঘুমে সহায়ক।
এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য লেখালেখির চর্চা একটি সহায়ক হাতিয়ার। কেউ যদি নেতিবাচক চিন্তার সাথে লড়াই করে থাকে তবে উত্তেজনা এবং চাপ থেকে মুক্তি দেয়ার একটি কৌশল হল সমস্ত নেতিবাচক চিন্তাগুলো কাগজে লেখা তারপর কাগজটি ছিঁড়ে ফেলে দেয়া বা পুড়িয়ে দেয়া। এটি প্রতীকীভাবে মনকে বুঝাতে সাহায্য করে যে এই চিন্তাগুলোর আর প্রয়োজন নেই।
দীর্ঘস্থায়ী প্যানিক অ্যাটাক বা উদ্বেগে ভোগে থাকলে ৫,৪.৩,২,১ নামক ‘গ্রাউন্ডিং কৌশল’ অনুশীলন শুরু করা যেতে পারে। যা চারপাশের বাস্তবতার সাথে যোগাযোগ করতে বা সংযুক্ত করতে সহায়তা করে। শুরুতে, চারপাশে যা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে এমন পাঁচটি জিনিস সন্ধান করতে হবে।
তারপর, চারটি জিনিস লক্ষ্য করতে হবে যা চারপাশে স্পর্শ করা যাবে; তারপর চারপাশে শুনতে পাওয়া যায় এমন তিনটি জিনিস শুনতে হবে ; চারপাশে গন্ধ পাওয়া যায় এমন দুটি জিনিস খুঁজুতে হবে এবং অবশেষে, একটি জিনিসের কথা চিন্তা করতে হবে যার স্বাদ নেয়া যাবে।
গভীর ভাবে পেটের শ্বাস নেয়ার অনুশীলন করতে হবে এবং শরীর শান্ত না হওয়া পর্যন্ত পুনরাবৃত্তি করতে হবে।কেউ যখন উদ্বিগ্ন হয়, তখন দ্রুত অগভীর শ্বাস নিতে থাকে যা সরাসরি বুক থেকে আসে, কিন্তু বুকের শ্বাস সঠিকভাবে রক্তকে অক্সিজেন সরবরাহ করে না এবং এর ফলে হৃদস্পন্দন, মাথা ঘোরা, পেশীর টান এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পেতে পারে।
তবে গভীর পেটে শ্বাস প্রশ্বাস মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায় এবং প্রশান্তি অনুভব করে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস শরীরের উদ্বেগ ও চাপ কমায়।