পটুয়াখালীর দুমকি থানার ওসি এবং দুই এসআইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক যুবক। ব্ল্যাকমেইল, নির্যাতন, চাঁদা দাবিসহ কয়েকটি অভিযোগে গত ১৪ মার্চ পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং ৩৮৭।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাউফল উপজেলার রাজনগর এলাকার সুমন উদ্দিনের ছেলে মো. জাকির হোসেনের খালাতো ভাই মো. সাদমান সাকিবের নামে দুমকি উপজেলার বাসিন্দা হোসনে আরা বেগম, রিজোয়ানা হিমেল, তাহের আলী রুমাসহ একটি ‘সংঘবদ্ধ চক্র’ খাদিজা শিমুকে দিয়ে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে, আদালতে যৌতুক মামলা দায়ের করেন। পরে সাদমান সাকিব এই ‘মিথ্যা মামলা’র বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি দুমকি থানাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
পরবর্তীকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে উভয়কে নিয়ে থানায় বসেন। কিন্তু বিবাদীরা অভিযোগকারী সাদমান সাকিব ও সাক্ষী জাকির হোসেনকে দেখেই সবার সামনে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে।
পরে পুলিশ উলটো সাদমান সাকিব ও জাকির হোসেনকে আটক করে এবং এসআই সাকায়েত হোসেন বিবাদীর পক্ষ নিয়ে বিবাদীদের নারী নির্যাতন মামলা করার নির্দেশ দেন এবং ওসি আব্দুস সালাম তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন।
এ সময় ওসি আব্দুস সালাম খাদিজা শিমুকে সাদমান সাকিবের পাশে বসিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করেন এবং ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। একপর্যায়ে এসআই সাকায়েত ও এসআই দেলোয়ার হোসেন আটক সাদমান সাকিব ও জাকিরের পরিবার থেকে ৩৫ হাজার টাকা ঘুস নিয়ে সাদা কাগজ মুচলেকা নেন। ওসি আব্দুস সালাম কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন জব্দ তালিকায় না দেখিয়ে রেখে তাদের ছেড়ে দেন।
পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে মো. জাকির হোসেন ওসি মো. আব্দুস সালাম, এসআই দেলোয়ার, এসআই সাকায়েত হোসেনসহ ঘটনায় জড়িত ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। ১৪ মার্চ মামলাটি করা হলেও এখনো আদালতের আদেশ পৌঁছেনি পিবিআইয়ের কার্যালয়ে।
এ বিষয়ে ওসি আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের বলেন, মামলা হয়েছে আদালতে। সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছাই হবে এতে আমার কোনো মতামত নেই। পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মামলার বিষয়টি আমি জানি। যেহেতু মামলাটি তদন্তাধীন আছে, আদালতই সত্য-মিথ্যা যাচাই করবেন।
পটুয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. কামরুল হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত আদালতের কাগজপত্র পাইনি। আদালতের আদেশ পেলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন বলেও তিনি যুগান্তরকে জানান।