বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, সরকার পুলিশ দিয়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ ছোট ছোট আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করছে। তবে ছোট ছোট আন্দোলনে বাধা দিয়ে সরকার আন্দোলনকে দুর্বার করে তুলছে।
শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে গণমিছিলে পুলিশি বাধার মুখে পড়লে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে প্রায় আধা ঘণ্টা রাজপথে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বিএনপির অভিযোগ, শনিবার সকাল থেকেই শহরের কাঠপট্টি সড়কে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়া ফরিদপুর প্রেসক্লাব, সাবেক মন্ত্রী কামাল ইউসুফের বাড়ির সামনে, কোর্ট চত্বরে ও হাসপাতালের সামনেসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের অবস্থান অতিক্রম করে নেতাকর্মীরা কাঠপট্টির কার্যালয়ে সমবেত হন। দুপুরে পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাব অভিমুখে গণমিছিল বের করার চেষ্টা করেন তারা। মাত্র কয়েক কদম এগিয়ে সামনে যেতেই পুলিশ তাদের বেরিকেড দেয়। এ সময় সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করা হয়।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অভিযোগ করেন, ফরিদপুরে গণমিছিলের আগের রাতে ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিছিলে আসার পথে নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হয়েছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং গ্রেফতারকৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, গণমিছিল আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা বাধা দিচ্ছে আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।
এ সময় কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপনসহ সহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিএনপির অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরিদপুরে বিএনপির ছয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শহরের কাঠপট্টিতে বিএনপির কার্যালয়ের নিচ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া রাতে অনেকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলের নেতাকর্মীরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মুরাদ হোসেন (৪৪), জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সোহেল শেখ (৩৭), জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ফারুক হোসেন (৩৬ ), আলীয়াবাদ ইউনিয়ন বিএনপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি বাদশা মিয়া (৪৩), বিএনপি কর্মী হাশেম খান (৫৪) ও মো: জাহিদ হোসেন (৪৩)।
গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন বলেন, সুনির্দিষ্ট মামলার আসামি, যারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে কিংবা এ ব্যাপারে পূর্বের অভিযোগ রয়েছে এবং যারা আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এ জাতীয় কোনো অভিযোগ নেই তাদের কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।