বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিলিমা হোসেন জুই ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কাছে বিচার চাইতে গিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় উল্টো সাংবাদিকদের পিটিয়েছেন দুই চিকিৎসক।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক হচ্ছেন কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. সৈয়দ বাকী বিল্লাহ ও প্যাথলজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সাহা।
এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের নেতারা। সাংবাদিকদের প্রথমে চর থাপ্পর, পরে চেয়ার দিয়ে পেটাতে থাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের দুই চিকিৎসক।
জানা যায়, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হন গত বৃহস্পতিবার। তার বিচার চাইতে ওই ছাত্রী ও তার মা শনিবার (২৬ আগস্ট) সকালে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে যান। তখন সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার শাকিল মাহমুদ, চিত্র সাংবাদিক সুমন হাসানসহ চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের স্টাফ রিপোর্টার কাওছার হোসেন রানা, চিত্র সাংবাদিক রুহুল আমিন, এশিয়ান টেলিভিশনের রিপোর্টার ফিরোজ মোস্তাফা ও চিত্র সাংবাদিক আজিম শরিফ ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোরের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মুশফিক সৌরভ যান তথ্য সংগ্রহে। ভুক্তভোগীরা তাদের বক্তব্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরায় হঠাৎ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় দুই চিকিৎসক-শিক্ষক। সাংবাদিকদের রুম থেকে বের করে দিয়ে র্যাগিংয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবারকে আটকে রাখে দুই চিকিৎসক।
সময় টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো রিপোর্টার শাকিল মাহামুদ জানান, ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় হঠাৎ করেই ডা. বাকী ও ডা. প্রবীর আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের ক্যামেরা ও ট্রাইপড ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলার কারণ কি আমরা জানি না। র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
চ্যানেল ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার কাওছার হোসেন রানা বলেন, আমরা সাক্ষাৎকারের জন্য বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাদের ওপর হামলা করাটা তাদের অপকর্ম ঢাকার প্রক্রিয়া। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ এসে গেট খোলে দুপুর ১টার দিকে।
বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন বলেন, হামলার ঘটনা উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত। আমরা ঘটনার বিচার চাই।
এদিকে এই ঘটনার পর দুপুুর দেড়টায় পুলিশের মধ্যস্থতায় কলেজ কতৃপক্ষ ও সাংবাদিক নেতারা আলোচনায় বসে। এরপর হামলাকারী দুই চিকিৎসক হামলার শিকার সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেলল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, দুই পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে।