বরিশালের গৌরনদীতে বাবার বাড়িতে মীম আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধু’র রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান মৃধার ঘর থেকে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
সে (মীম) উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান মৃধার একমাত্র মেয়ে ও কালকিনি উপজেলার মোক্তারহাট গ্রামের শান্ত মাতুব্বরের স্ত্রী।
\
স্থানীয়রা জানায়, গত ২বছর পূর্বে গৌরনদী উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান মৃধার একমাত্র মেয়ে মীম আক্তারের (২০) সঙ্গে কালকিনি উপজেলা মোক্তারহাট গ্রামের রিপন মাতুব্বরের ছেলে শান্ত মাতুব্বরের সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে মীম স্বামীর বাড়ির চেয়ে বাবার বাড়িতে বেশী দিন থাকতেন। প্রেমিকের সাথে মোবাইল ফোনে কাথা বলার অপরাধে দাম্পত্য কলহের জেরধরে গত ৬ মাস পূর্বে স্বামী বাড়ি থেকে মীম বাবার বাড়িতে চলে আসেন ও গত ১ মাস পূর্বে অনলাইনে পোশাক ব্যবসা শুরু করেন।
মারা যাওয়া মীমের মা মুক্তা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী শুক্রবার বিকালে বাবার বাড়ি কালকিনি উপজেলার ঠেঙ্গামারা গ্রাম বেড়াতে যাই।
বাবার বাড়িতে বসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মীমের কাছে মোবাইল ফোন করে মেয়ে মীম ও ছেলে শিফাত মৃধাকে ভাত খেয়ে ঘুমাতে বলি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমরা স্বামী-স্ত্রী বাড়ি ফিরে এসে ভাত খেয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
এ সময় স্বামী (মিজানুর) ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘরের পিছনের দরজা ও মেয়ে মীমের শয়ন কক্ষের দরজা খোলা ও বাতি জ¦লতে দেখেন।
তখন স্বামী মেয়ের শয়ন কক্ষের দিকে তাকিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মীমের লাশ দেখে ডাকচিৎকার দেয়। যে অবস্থায় মীমের লাশ পাওয়া গেছে, তাতে আমাদের ধারনা হচ্ছে, কে বা কারা আমার মেয়ে মীমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
মীমের বাবা মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর ভাতিজা সাগর মৃধা ও মেয়ে মীম আক্তারের বিভিন্ন জায়গায় বেড়ানো ছবি মেয়ে জামাতা শান্ত মাতুব্বর আমাকে দেখায় ও সাগর মৃধা মোবাইল ফোনে শান্তকে হুমকি দিয়েছে বলে আমাকে জানায়।
মেয়ে মীমের লাশ যে ভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে তাতে আমরা ধারনা করছি যে, পরিকল্পিত ভাবে কে বা কারা মীমকে হত্যা করে মীমকে ফ্যানের সাতে ঝুলিয়ে রেখেছে।
মারা যাওয়া মীমের একমাত্র ভাই ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শিফাত মৃধা জানান, ঘটনার সময় সে সামনের বারান্দায় টিভি দেখছিল। সে ঘরে থাকলেও কিছুই টের পায়নি।
গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, ওই রাতেই মীমের মরদেহ উধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল শনিবার সকালে মীমের মরদেহ বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে গতকাল শনিবার সকালে গৌরনদী থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা । এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এ জাতীয় আরো খবর..