ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানে পুলিশের দেড় লাখ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেবেন ২২শ মাস্টার ট্রেইনার। এসব মাস্টার ট্রেইনার তৈরির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আজ রবিবার সকালে উদ্বোধন করবেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে দেড়শ পুুলিশ কর্মকর্তাকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ২২শ মাস্টার ট্রেইনার তৈরির আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। পরবর্তীকালে মাস্টার ট্রেইনাররা সারাদেশে ১৩০টি ভেন্যুতে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেবেন। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র বলছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর, নির্বাচনের আগে, ভোটগ্রহণকালে এবং ভোটের পর কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে তার দক্ষতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রথমে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরে মাস্টার ট্রেইনাররা সারাদেশে ১৩০টি ভেন্যুতে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেবেন। এ প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর কয়েকটি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে; তৈরি করেছে ডকুমেন্টারি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে অতিরিক্ত ডিআইজি পর্যন্ত পদধারী পুলিশ কর্মকর্তারা মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে প্রশিক্ষণ নেবেন।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, কয়েকটি লক্ষ্য সামনে রেখে মাস্টার ট্রেইনার তৈরির কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। লক্ষ্যগুলো হলো- নির্বাচনে চাপ, শক্তি বা হস্তক্ষেপমুক্ত আইনানুগ দায়িত্ব পালন; পুলিশকে ফ্রন্ট ফোর্স হিসেবে তুলে ধরে নির্বাচনকালে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখা; নির্বাচনকালে পুলিশের পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা; গুজব ও অপপ্রচারসহ সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় গোয়েন্দা তৎপরতাসহ সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি। নির্বাচনসংক্রান্ত যত আইন ও বিধি রয়েছে, সেসব বিষয়েও পুলিশকে প্রশিক্ষিত করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী বিষয়ে অন্যান্য সংস্থা সদস্যদের সঙ্গে কীভাবে সমন্বয় সাধন করা হবে- এ ব্যাপারেও পুলিশকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
পুুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক অসদাচরণ, জাল-জালিয়াতি, দিনের ভোট রাতে করা এবং আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে চরম বিতর্কিত হয়ে পড়ে পুলিশ বাহিনী। আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে পুলিশ বাহিনীর সেই কলঙ্কমোচনের নির্বাচন। পুলিশের প্রশিক্ষণকালে বিষয়টি বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের তাগিদ দেওয়া হবে।