নিজের বাসভবনে জনশুনানি চলাকালে হামলার শিকার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সাধারণ মানুষের অভিযোগ শুনতে আয়োজিত সাপ্তাহিক জনশুনানি চলছিল। ঠিক তখনই ভিড়ের মধ্য থেকে এক যুবক উঠে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে চড় মারেন এবং চুল ধরে টান দেন বলে অভিযোগ। হামলাকারীর বয়স আনুমানিক ৩০ বছর।
বিজেপির দাবি, হঠাৎ ওই যুবক রেখার বাসভবনে ঢুকে একটি কাগজ দেওয়ার নাম করে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে যান। এর পরেই যুবক চিৎকার করে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। রেখার চুল টেনে ধরে তাকে চড়ও মারেন ওই যুবক।
আনন্দবাজার সূত্রে খবর, ঘটনার সময় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, আক্রমণকারী একজন মহিলা ছিলেন! তবে মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে, তা নিশ্চিত।
বিষয়টি জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-ও। কোনো কোনো সূত্রে খবর, রেখাকে লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়া হয়।
ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা অভিযুক্তকে আটক করে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ জানতে চাচ্ছে, এই হামলা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, নাকি যুবকটি মানসিক ভারসাম্যহীন।
এ ঘটনায় দিল্লির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
দিল্লি বিজেপির প্রধান বীরেন্দ্র সচদেব মুখ্যমন্ত্রীর উপর ‘হামলার’ তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জনশুনানির সময় এক যুবক রেখার কাছে এসে কিছু কাগজপত্র দেখান। এর পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হাত টেনে ধরেন। হাতাহাতিও হয়। সে সময় একটি টেবিলে ধাক্কা লাগে।’ তবে চড় মারা কিংবা পাথর ছোড়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বীরেন্দ্র।
এছাড়া দিল্লির মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা অভিযোগ করেছেন, ‘বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার উন্নয়নমূলক কাজ সহ্য করতে পারছে না। এটা পরিকল্পিত হামলা বলেই মনে হচ্ছে।’
বিজেপির আরেক নেতা হরিশ খুরানা বলেন, ‘এটা শুধুই হামলা নয়, গণতন্ত্রের ওপর আঘাত।’
অন্যদিকে, আম আদমি পার্টির নেত্রী এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অতীশি ঘটনার নিন্দা করে বলেন, ‘মতবিরোধ ও প্রতিবাদের অধিকার গণতন্ত্রে আছে, কিন্তু হিংসার কোনো স্থান নেই।’ তিনি দ্রুত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
ঘটনার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।