পাকিস্তান, ভারত-শাসিত কাশ্মীর এবং নেপালের বিভিন্ন অংশে হঠাৎ বন্যায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশগুলোর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার তারা জানিয়েছে যে, উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমপক্ষে ২০৩ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ত্রাণ তৎপরতার সময় একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাঁচজন ক্রু সদস্য নিহত হয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভারত-শাসিত কাশ্মীরের চাশোটি শহরে শুক্রবার কমপক্ষে ৬০ জন মারা গেছেন এবং ২০০ জনেরও বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। হিন্দু পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান চাশোটি শহরে শুক্রবার কমপক্ষে ৬০ জন মারা যান এবং ২০০ জনেরও বেশি নিখোঁজ রয়েছেন।
এছাড়া নেপালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, নেপালে কমপক্ষে ৪১ জন মারা গেছেন এবং আরও ১২১ জন আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সালারজাইয়ে বসবাসকারী একজন ছাত্র ফরহাদ আলী বলেন, ‘যখন বৃষ্টিপাত তীব্র হয়, তখন আমার মনে হয় যেন ভূমিকম্প হয়েছে। পুরো মাটি কাঁপছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবল বৃষ্টির মধ্যে আমার পুরো পরিবার বাইরে বেরিয়ে আসে। আমরা দেখতে পাই আমাদের বাড়ির কাছে কাদার স্রোত এবং বিশাল পাথরের ঢেউ ধেয়ে আসছে। মনে হচ্ছিল যেন কেয়ামত এসে গেছে, পৃথিবীর শেষ প্রান্তের দৃশ্যগুলো সরাসরি দেখছি।’
জুনের শুরুতে বিশেষ করে প্রচণ্ড বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে মুষলধারে বৃষ্টিপাত, বিশাল ভূমিধস এবং মারাত্মক বন্যার পানি এই অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে পুরো এলাকা ভেসে গেছে এবং ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ খাইবার পাখতুনখোয়ায় বন্যার সতর্কতা জারি করেছে এবং আকস্মিক বন্যা ও নগর বন্যার সতর্কতা জারি করেছে।
অন্যদিকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে মুষলধারে বৃষ্টিপাতে অসংখ্য ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং যানবাহন ভাসিয়ে নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু সংকট এই বছর হিমালয়ে মৌসুমী বন্যার তীব্রতা এবং ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে দিয়েছে।