রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে ৬২ ঘণ্টা বহিরাগতদের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বেরোবি ক্যাম্পাসে আগামী ১৬ জুলাই পালিত হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকী ও ‘জুলাই শহীদ দিবস’। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নভাবে সম্পন্ন করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সময় কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। নবীন শিক্ষার্থীরা যারা এখনো আইডি কার্ড সংগ্রহ করেননি, তাদের জন্য নিজ নিজ বিভাগীয় প্রধানদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘জুলাই শহীদ দিবসের গুরুত্ব বিবেচনায় ক্যাম্পাসে আগত অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, আবু সাঈদের শাহাদৎবার্ষিকী ও ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন।এজন্য দিনটি ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৬টায় পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস থেকে যাত্রা, সকাল সাড়ে ৭টায় শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত, সকাল সোয়া ৯টায় কালোব্যাজ ধারণ ও শোক র্যালি, ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদ তোরণ ও মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা, বিকেল সাড়ে ৩টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অনুষ্ঠানে আবু সাঈদের বাবা থাকবেন প্রধান অতিথি। যে চার উপদেষ্টা অতিথি থাকবেন তারা হলেন- আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. তানজীমউদ্দীন খান।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতে থাকবেন চার উপদেষ্টা। এ ছাড়া আরও ২১ জন শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তারা সবাই স্টেজের ওপরে থাকবেন। আর উপদেষ্টাসহ অন্যান্য অতিথিরা থাকবেন নিচে।