জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করেছে প্রসিকিউশন। আসামিদের পক্ষে অভিযোগ গঠনের বিপক্ষে শুনানির জন্য আগামী সোমবার (৭ জুলাই) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ উপস্থিত ছিলেন।
শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক মামলা। তিনি এই মামলার নথিপত্র ২৫ জুন পেয়েছেন। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাননি। তা ছাড়া তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাই তার প্রস্তুতির জন্য ১৫ দিন সময় প্রয়োজন।
ট্রাইব্যুনাল ৬ দিন সময় মঞ্জুর করে আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। সেদিন আসামিপক্ষ যুক্তি তুলে ধরবে।
মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন কারাগারে আছেন। আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অংশ না নেওয়ার কথা জানান।
এর আগে ২৪ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ১ জুলাই দিন ধার্য করেন। ১ জুন শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৭ জুন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ নোটিশ জারি করেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার। পত্রিকায় সেই নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে।
১৬ জুন জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে এক সপ্তাহের মধ্যে হাজির হতে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ২৪ জুন এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
গত ১ জুন শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন। একই সঙ্গে এ মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
সেদিন আদালতে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুল ইসলাম; যা সব গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ১২ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসাবে শেখ হাসিনার নাম উঠে এসেছে।